চবির এক শিক্ষক ও ৫ কর্মকর্তা-কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৪ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:০৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষক, এক কর্মকর্তা এবং চার কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৬২তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্য সূত্রে জানা যায়, সমুদ্রবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইদুল ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থীদের কুপ্রস্তাব দেওয়া, যৌন হয়রানি, বিভাগীয় আসবাবপত্র জোরপূর্বক দখল, অফিস রুমকে দলীয়করণ এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিদেশি স্কলারশিপের আবেদন করা। এছাড়া সহকর্মীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে তেড়ে যাওয়া এবং উপউপাচার্যকে নিয়ে কটূক্তিসহ নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি হয়। তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে সিন্ডিকেটে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া সিন্ডিকেটে দ্বিতীয় আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। সেই তদন্তের প্রতিবেদন অনুসারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জানা গেছে, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপকমিটির সদস্য। তার বিরুদ্ধে গণ অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াসহ অসদাচরণের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সেই সময় তার বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিল।

বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা হলেন গোলাম কিবরিয়া। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ঠিকাদারকে কাজ দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সরাসরি টাকা লেনদেনের একটি ভিডিও গণমাধ্যমে ছড়িয়েছিল সে সময়।

এছাড়া শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে অ্যাকাউন্টিং বিভাগের নিম্নমান সহকারী তানভীর আহমেদ, ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের নিম্নমান সহকারী সায়ন দাশগুপ্ত, শিক্ষকদের ব্যক্তিগত নথি শাখার নিম্নমান সহকারী পারভেজ হাসান, হিসাব নিয়ামক দপ্তরের উচ্চমান সহকারী মাহফুজুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, বিগত সময়ে এসব কর্মচারীর বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করেছে। এছাড়া এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টাকা লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। এসব নিয়ে তদন্ত কমিটির সুপারিশের পর সিন্ডিকেট সভায় তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

শিক্ষক সাইদুল ইসলাম সরকার সম্পর্কে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে। সেই মোতাবেক তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া দ্বিতীয় আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দিলে বরখাস্তের আদেশ চূড়ান্ত হবে।

এ ব্যাপারে সমুদ্রবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইদুল ইসলাম সরকার আজাদীকে বলেন, আমি এখনো কোনো কাগজপত্র হাতে পাইনি। পেলে আপনাদের জানাব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে সালিশি বৈঠকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা
পরবর্তী নিবন্ধতেল সরবরাহ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে, উদ্বোধন ১৪ আগস্ট