চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ডের দুই নেতার মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে মারামারির পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে। দুইজনই একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন। গত রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলে এ ঘটনা ঘটে। সংগঠনটির নেতাদের মারামারিতে হলটির একটি কক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ডের দপ্তর সম্পাদক ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ–দপ্তর সম্পাদক আরাফাত রায়হানকে মারধর করেছেন সংগঠনটির সভাপতি মো. রমজান হোসাইন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। রমজান পাল্টা আরাফাতের বিরুদ্ধে নিজের রুম ভাঙচুর ও জুনিয়রদের দিয়ে তাকে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন।
আরাফাত রায়হান ও মো. রমজান হোসাইন দুজনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হল শাখা ছাত্রলীগের উপ–গ্রুপ সিএফসির নেতা। অভিযোগ করা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ডের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি মো. রমজান হোসাইন নতুন কমিটি না দিয়ে দীর্ঘদিন নিজের পদ ধরে রেখেছেন। সমপ্রতি মুক্তিযুদ্ধ কোটা ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্দোলন শুরু হলে ব্যাপারটি আরও বেশি আলোচিত হয়। রমজানের সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্টও করেন আরাফাত।
তিনি লিখেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্মের মেয়াদহীন কমিটির সভাপতি রমজান হোসেন অপুকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। এই পোস্টের পর ক্ষিপ্ত হয়ে আরাফাতের রুমে যান রমজান। তাদের মধ্যে কথা–কাটাকাটির এক পর্যায়ে আরাফাতকে ধাক্কা ও থাপ্পড় দেন। এ সময় আরাফাতের হাতে জখম হয়। পরে আরাফাতের অনুসারীরা আমানত হলে রমজানের ৩০৯ নম্বার রুম ভাঙচুর করে।
শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ–দপ্তর সম্পাদক আরাফাত রায়হান বলেন, সকালে আমি রুমে শুয়ে ছিলাম। রমজান এসে কথা বলবে বলে আমাকে দরজা বন্ধ করতে বলে। আমি কেন এমন পোস্ট করেছি এজন্য আমার উপর চিল্লাপাল্লা শুরু করে। একপর্যায়ে আমাকে ঘুষি মারলে আমার চোখ ফুলে যায়। পরে সে আমাকে চাকু দিয়ে আঘাত করে।
রমজানকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে আরাফাত বলেন, এটা মিথ্যা অভিযোগ। তাকে মারধর করা হয়নি। আর তার রুম কে ভাঙছে এটাও আমি জানি না।
অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের মো. রমজান হোসাইন বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ডের বর্তমান সভাপতি এবং শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ–দপ্তর সম্পাদক ছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে আমি সবসময় কাজ করেছি। কিছু বিপথগামী জুনিয়র আমার রুম ভাঙচুর করে এবং ইতিপূর্বে আমার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিয়ে আমাকে ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডকে বিকৃত করে। তাছাড়া তারা মহান মুক্তিযুদ্ধ কে অবমাননা করে। আমি এর প্রতিবাদ করায় আমার রুম ভাঙচুর করে।
এ বিষয়ে শাহ আমানত হলের প্রভোস্ট প্রফেসর নির্মল কুমার সাহা বলেন, রোববারের ঘটনার জন্য আমরা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আমরা প্রতিবেদন সাপেক্ষে দোষীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।