চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে ২০ দিনব্যাপী ‘দারসুল কুরআন ও গণ–ইফতার মাহফিল’ কর্মসূচির আয়োজন করেছে মিনার নামে একটি সংগঠন। এতে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে খোলা মাঠে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিদিন বিকাল পাঁচটার পর এতে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর দারসুল কুরআন পেশ করছেন ইসলামিক বক্তারা। ছাত্রীদের জন্য এ আয়োজন করা হয়েছে ক্যাম্পাসের খালেদা জিয়া হলে।
গতকাল মঙ্গলবার রোজার তৃতীয় আলোচক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ এনামুল হক। তিনি ‘মুসলিম উম্মাহর পশ্চাৎপদতার কারণ ও প্রতিকার’ নিয়ে কুরআন–হাদিসের আলোকে আলোচনা করেন। এদিন ছাত্রীদের জন্য গণ–ইফতার আয়োজন করা হয় চবির শামসুন্নাহার হলে। এ আয়োজন ইতোমধ্যে দেশব্যাপী ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আয়োজনের প্রশংসা করে পোস্ট দিতে দেখা গেছে।
এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক ক্যাম্পাসে এমন আয়োজন করা প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী রয়েছেন, যাদের পক্ষে ইফতার করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। তারা এমন উদ্যোগে খুশি হবেন। চবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী রাসেল আহমেদ বলেন, এ আয়োজনের মাধ্যমে সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি হচ্ছে। অনেকে বাসা আসার সময় যা পারছে নিয়ে আসছে এবং সেটা পাশের জনের সাথে ভাগ করে খাচ্ছে। আর এতো বড় পরিসরে ইফতার করার আলাদা মজা রয়েছে। গণইফতার কার্যক্রম সম্পর্কে মিনার সহসভাপতি ও চবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলী বলেন, তৃতীয়দিনের মতো আমাদের গণ–ইফতার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্যের চেয়েও বেশি মানুষ উপস্থিত হয়েছেন। যার কারণে, প্রথমদিন পর্যাপ্ত ইফতার ব্যবস্থা করতে পারিনি। এরপর আমরা আয়োজন বড় করেছি। তিনি আরও বলেন, আমাদের গণ–ইফতারে প্রতিদিন দুই হাজারের মতো উপস্থিতি হচ্ছে। আমরা সবার জন্য ছোলা, মুড়ি, পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুরচপ, খেজুর, শরবত এবং ফিরনির ব্যবস্থা রাখছি। এ ছাড়া ছাত্রীদের জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বা শামসুন্নাহার হলে আমাদের গণইফতার কার্যক্রম চলছে। সেখানে প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক ছাত্রী উপস্থিতি হচ্ছে। সেখানে ছাত্রী বোনদের মাধ্যমে ইফতার আয়োজন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে মিনার ও চবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, গত বছর রমজানের সময় ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামক ফেসবুক গ্রুপে কিছু শিক্ষার্থী পোস্ট করেন যে, ‘তারা ইফতার করতে পারছেন না। যদি কোনো মসজিদে ইফতার কর্মসূচি থাকে, তাহলে তাদেরকে জানাতে।’ এই বিষয়টি দেখার পর গত বছরই গণইফতার কর্মসূচি পালনের ইচ্ছে থাকলেও বড় পরিসরে করা সম্ভব হয়নি। তবে এ বছর সেই সকল শিক্ষার্থীদের কল্যাণে একটানা ২০ দিন গণইফতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। তৃতীয়দিনের মতো দারসুল কুরআন ও গণ–ইফতার সম্পন্ন হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।