পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরিবদের জন্য আসা ভিজিএফ চাউলের কার্ড বিতরণ নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে চন্দনাইশে বিএনপি ও এলডিপি নেতাকর্মীদের মধ্যে কয়েক দফা মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার উপজেলার কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দুপক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতরা চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে চিকিৎসা নিয়েছেন।
জানা যায়, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরিবদের জন্য আসা ভিজিএফ চালের কার্ড বিতরণ বিষয় নিয়ে কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বিএনপি নেতা নওশা মিয়া ও এলডিপি নেতা আবু ছৈয়দের মধ্যে কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে বিএনপি ও এলডিপির নেতাকর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লে কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম বিষয়টি মীমাংসা করে দুই পক্ষকে দুই দিকে পাঠিয়ে দেন। দুপুরে রওশনহাট এলাকায় দুই পক্ষ আবারও কথা কাটাকাটি ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। খবর পেয়ে চন্দনাইশ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এসময় আহতরা চন্দনাইশ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও দুই পক্ষ তৃতীয় দফায় মারামারিতে লিপ্ত হয়। এতে বিএনপি এলডিপির বেশ কয়েক জন নেতাকর্মী আহত হয়। আহতদের মধ্যে উভয় পক্ষের ৭ জনের নাম পাওয়া গেছে। এরা হলেন সাইদুর রহমান মিটু (৩০), আনোয়ার হোসেন (৩৮), মো. হায়দার (৪০), মো. ইব্রাহিম খোকা (৩৫), আহমদুর রহমান বানু (৫৫), আবু ছৈয়দ (৬৫), মোহাম্মদ আলী (৫৫)। আহতদের চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে চিকিৎসা দেয়া হয়। এদের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য আহমদুর রহমান বানুকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এদিকে উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যার পর রওশনহাট এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি নেতাকর্মীরা।
কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম জানান, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভিজিএফ চাউল বিতরণের বিষয়ে বিএনপি, এলডিপি, জামায়াত ও এনসিপি‘র সাথে সমন্বয় হয়। এজন্য গতকাল সকালে প্রথমে এলডিপি নেতাকর্মীদের সাথে বৈঠককালে বিএনপি ও এলডিপির দু‘নেতার মধ্যে কার্ড বিতরণের বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে পরিষদের বাইরে দু‘পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হলে তিনি তৎক্ষনাৎ বিষয়টি সমাধান করে দু–পক্ষকে দুদিকে পাঠিয়ে দেন। পরে তিনি উপজেলায় চলে যান। দুপুরে উভয় পক্ষের মধ্যে রওশনহাট মক্কা হোটেলের সামনে এবং চন্দনাইশ হাসপাতালের সামনে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়। ঘটনাটির সাথে ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্টতা নেই।
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান জানান, ভিজিএফ চাউল বিতরণের বিষয় নিয়ে বিএনপি এলডিপি নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা শুনে পুলিশ পাঠানো হয়। বর্তমানে এলাকায় পুলিশ অবস্থান করছে এবং পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনার ব্যাপারে কোনো পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।