বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের উন্নয়ন সহায়তা খাত থেকে দেশের উপজেলা ও পৌরসভাগুলোর জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের বিপরীতে ২০২ কোটি ২৪ লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা ছাড় করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা ও ১৫ পৌরসভা পেয়েছে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ছাড়কৃত অর্থ সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও পৌরসভার উন্নয়নে খরচ করা হবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৪–২০২৫ অর্থবছরে উপজেলাগুলোর জন্য উন্নয়ন সহায়তা থোক খাতে বরাদ্দ আছে ৭৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম কিস্তি বাবদ গত সোমবার দেশের ৪৯৫ উপজেলার জন্য ১১৫ কোটি টাকা ছাড় করা হয়। এতে চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা পেয়েছে ৩ কোটি ৪১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সকারী সচিব মো. শওকত ওসমান একই বিভাগের চিফ একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসারকে অর্থ মঞ্জুরি প্রদান পত্র করেন। ছাড়কৃত অর্থের মধ্যে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার জন্য ২২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, আনোয়ারা উপজেলার জন্য ১৫ লাখ ৬ হাজার টাকা, বাঁশখালী উপজেলার জন্য ২৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা, বোয়ালখালী উপজেলার জন্য ১৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, চন্দনাইশ উপজেলার জন্য ১৬ লাখ ৫৪ হাজার টাকা, ফটিকছড়ি উপজেলার ২৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, হাটহাজারী উপজেলার জন্য ২৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা, লোহাগাড়া উপজেলার জন্য ২০ লাখ টাকা, মীরসরাই উপজেলার জন্য ২৮ লাখ ৮৩ হাজার টাকা, পটিয়া উপজেলার জন্য ২৫ লাখ ৯ হাজার টাকা, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জন্য ২৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা, রাউজান উপজেলার জন্য ২২ লাখ ৮ হাজার টাকা, সন্দ্বীপ উপজেলার জন্য ২৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা, সাতকানিয়া উপজেলার জন্য ২৩ লাখ ২১ হাজার টাকা এবং সীতাকুণ্ড উপজেলার জন্য ২৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা ছাড় করা হয়েছে।
ছাড়কৃত অর্থ ব্যয় প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা হচ্ছে, উপজেলা পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার যৌথভাবে মঞ্জুরিকৃত অর্থের আয়ন ও ব্যয়ন কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন। ব্যয়ের ক্ষেত্রে পিপিআর–২০০৮ অনুসরণসহ যাবতীয় আর্থিক বিধি–বিধান যথাযথভাবে পরিপালন করতে হবে। বরাদ্দের অধীন অনুমোদিত স্কিম এবং প্রচলিত আর্থিক রীতি–নীতি অনুযায়ী ব্যয় নির্বাহ করে সংশ্লিষ্ট হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার নিকট বিল দাখিলপূর্বক সরকারি তহবিল থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ আহরণ করতে হবে। এছাড়া মঞ্জুরিকৃত অর্থের অব্যয়িত অংশ ২০২৫ সালের ৩০ জুনের মধ্যে চালানযোগে সরকারি কোষাগারে জমা করতে হবে। ব্যয় বিবরণী আগামী বছরের ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে প্রেরণ করতে হবে।
পৌরসভা : স্থানীয় সরকারি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৪–২০২৫ অর্থবছরে পৌরসভা ও উপজেলার উন্নয়ন বাজেটে উন্নয়ন সহায়তা খাতে বরাদ্দ আছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে পৌরসভার জন্য বরাদ্দ আছে ৪৫০ কোটি টাকা। যার ৩৪৯ কোটি টাকা রক্ষিত আছে সাধারণ বরাদ্দ উপ–খাতে। এর মধ্যে প্রথম কিস্তি বাবদ দেশের ৩৩০টি পৌরসভার অনুকূলে ৮৭ কোটি টাকা ২৪ লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা ছাড় করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ১৫ পৌরসভা পেয়েছে ৩ কোটি ৮৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এ বিষয়ে গত সপ্তাহে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ–সচিব ড. সালমা সিদ্দিকা দাপ্তরিক পত্র দেন একই বিভাগের চিফ অ্যাকাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসারকে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের পৌরসভাগুলোকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে নয়টি পৌরসভা ‘ক’, চারটি পৌরসভা ‘খ’ এবং দুইটি পৌরসভা ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত। ‘ক’ শ্রেণির পৌসভাগুলো হচ্ছে– পটিয়া, বারৈয়ারহাট, সীতাকুণ্ড, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, হাটহাজারী, রাউজান ও মীরসরাই। খ’ শ্রেণির পৌরসভাগুলো হচ্ছে– রাঙ্গুনিয়া, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি ও বোয়ালখালী। ‘গ’ শ্রেণির পৌরসভা দুটি হচ্ছে নাজিরহাট ও দোহাজারী।
ছাড়কৃত অর্থের মধ্যে চট্টগ্রামের ১৫ পৌরসভা পেয়েছে ৩ কোটি ৮৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে পটিয়া, বারৈয়ারহাট, সীতাকুণ্ড, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, হাটহাজারী, রাউজান ও মীরসরাই পৌরসভা ২৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা করে পেয়েছে দুই কোটি ৪৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা। রাঙ্গুনিয়া, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি ও বোয়ালখালী পৌরসভা সাড়ে ২৪ লাখ টাকা করে পেয়েছে ৯৮ লাখ টাকা। এছাড়া নাজিরহাট ও দোহাজারী পৌরসভা সাড়ে ২২ লাখ টাকা করে পেয়েছে ৪৫ লাখ টাকা।