আর কদিন পরেই মাঠে গড়াচ্ছে মুজিববর্ষ ফুটবল টুর্নামেন্ট। করোনাকালে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত এই টুর্নামেন্ট হবে দেশে মাঠে গড়ানো প্রথম ফুটবল টুর্নামেন্ট। এই টুর্নামেন্টকে ঘিরে তাই চট্টগ্রামের ফুটবলারদের মাঝে আগ্রহের শেষ নেই।
কারণ এই টুর্নামেন্টে খেলছে চট্টগ্রামের সব ফুটবলার। যারা জাতীয় দল থেকে শুরু করে চট্টগ্রামের লীগে পর্যন্ত খেলে থাকেন। টুর্নামেন্টে খেলছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। করোনাকালেও যিনি ফুটবলারদের নিয়ে অনুশীলন করেছেন চট্টগ্রামে। দেশের সেরা এই ফুটবলার কিন্তু চট্টগ্রামের হয়ে খেলার সুযোগই পাননি। সে হতাশার কথা বলতে গিয়ে মামুন বলেন, আসলে এই টুর্নামেন্টটি তার নিজের জন্য বিরাট একটি গৌরবের। কারণ তিনি তার দুই দশকের মত ক্যারিয়ারে নিজ শহরে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। যে অপ্রাপ্তি তাকে এতদির কুড়ে কুড়ে খেত সেটা এখন পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে। মামুন বলেন, একদিক থেকে এই টুর্নামেন্ট যেমন করোনা পরবর্তীতে প্রথম কোন টুর্নামেন্ট হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে তেমনি এই টুর্নামেন্ট চট্টগ্রামের তরুণ ফুটবলারদের জন্য বড় একটা সুযোগ হয়ে থাকবে।
মামুনুল বলেন, তার দলসহ চারটি দলেই বেশ কিছু তরুণ ফুটবলার রয়েছে। যাদের জন্য এই টুর্নামেন্ট বড় একটা মঞ্চ। কারণ এই টুর্নামেন্ট যখন চলবে তখন ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবের কর্মকর্তারা আসবেন চট্টগ্রামে। তারা তাদের ক্লাবের জন্য ফুটবলার বাছাই করবে। কাজেই নিজেদের ক্যারিয়ারকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চট্টগ্রামের তরুণ ফুটবলারদের এটা সবচাইতে বড় সুযোগ। এই সুযোগকে তাদের কাজে লাগাতে হবে। আমরা যারা সিনিয়র ফুটবলার রয়েছি আমাদের দায়িত্বও থাকবে তরুণদের এগিয়ে যেতে সহায়তা করা। অভিজ্ঞদের সাথে খেলে অনেক কিছু শেখার সুযোগ রয়েছে তরুণদের। যা তাদের সামনের দিন গুলোতে কাজে লাগবে। বেশিরভাগ সময় এমন দেখা যায় যে, তারকাদের সাথে খেলতে গিয়ে তরুণরা নিজের ছন্দ হারিয়ে ফেলে। মামুনুল বলেন, আসলে তেমনটা হয়ে থাকে। তবে এটাও ঠিক যখনই একজন তারকা ফুটবলারের সাথে খেলে নিজের অনেক কিছু শুধরাতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে তরুণদের শেখার মানসিকতাটা থাকতে হবে। মাঠে যখন নামবে তখন ভয়ের কোন কারণ নেই। তরুণদের ভাবতে হবে একাদশে সবাই আমার সহযোদ্ধা। কাজেই এখানেই নিজের সেরাটা দেখাতে হবে।
বাংলাদেশ দলেল এই তারকা ফুটবলারের মতে চট্টগ্রামে বেশ কিছু ফুটবলার রয়েছে যাদের প্রতিভা রয়েছে। হয়তো সুযোগটা সেভাবে মিলছেনা। তারপরও বাংলাদেশ দলে একসাথে ৮ জন ফুটবলার খেলেছে চট্টগ্রামে। যা অনেক বড় ব্যাপার। এখনকার তরুণদের সেদিকে এগুতে হবে। মনে রাখতে হবে মাঠে নেমে নিজের সেরাটা দিয়ে নিজেকে চেনাতে হবে।
মামুনুল বলেন, এই মুহূর্তে আমি পুরোপুরি ফিট না। যদি আমি পুরো ফিট না হই তাহলে আমার জায়গায় একজন তরুণকে খেলিয়ে তার ক্যারিয়ারটা এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়তা থাকবে। তবে চট্টগ্রামের ফুটবলারদের মনে রাখতে হবে মাঠে পারফরম্যান্সের কোন বিকল্প নেই। আজ চট্টগ্রামে যখন ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হচ্ছে তখন সারা দেশের কোথাও ফুটবল নেই। এই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে হবে চট্টগ্রামের তরুণদের। কারণ এমন সুযোগ সব সময় আসবে না। মনে রাখতে হবে এই টুর্নামেন্ট চট্টগ্রামের তরুণ ফুটবলারদের উপরে যাওয়ার সিঁড়ি। এই সিঁড়ি বেয়ে তাদের সামনের দিকে যেতে হবে। যেখানে পাশে পাবে জাতীয় দলের ফুটবলারদের। তাই তরুণদের উচিত এই টুর্নামেন্টটাকে কাজে লাগানো। আর সেটা পারলে এই আয়োজনও হবে স্বার্থক।