চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা মানবসৃষ্ট, নিরসনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই

বির্জাখাল পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান আগের নগর পিতা, সিডিএ চেয়ারম্যানরা জলাবদ্ধতার জন্য দায়ী

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৪ মে, ২০২৫ at ৮:০৫ পূর্বাহ্ণ

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সেতু, সড়ক, পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, চট্টগ্রামের যে জলাবদ্ধতা এটি একেবারে মানবসৃষ্ট সমস্যা। আগে যারা নগর পিতা, সিডিএ’র চেয়ারম্যান ছিলেন তারাই এই জলাবদ্ধতা সৃষ্টির জন্য দায়ী। আমি চট্টগ্রামে প্রাইমারি, হাই স্কুল ও চট্টগ্রাম কলেজে পড়েছি। কিন্তু আমি কখনোই এরকম জলাবদ্ধতা দেখিনি। খাল দখল করে বাড়ি, অফিস, মার্কেট করে ফেলা হয়েছিল। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর এসব ভেঙে এখন আবারও খালে পরিণত করার কাজ করছি। আমরা সবাইকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মহানগরীর নিজস্ব অর্থায়নে বির্জাখাল খনন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে প্রধান বক্তা ছিলেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগরী আমির শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় এতে আরো উপস্থিত ছিলেন সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম, সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, সিডিএর বোর্ড সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মনজারে খোরশেদ আলম, প্রকৌশলী মোমিনুল হক, নগর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি খায়রুল বাশার, মোহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফুর রহমান, ডা. আবু নাছের, ডা. মো. সিদ্দিকুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান ইলাহী, আমির হোছাইন, বাকলিয়া থানা আমির সুলতান আহমদ, পাঁচলাইশ থানা আমীর ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুল হাসান রুমী, বাকলিয়া থানা নায়েবে আমির আবুল মনসুর, চকবাজার থানা নায়েবে আমির আবদুল হান্নান, সেক্রেটারি সা’দুর রশিদ চৌধুরী, বাকলিয়া থানা সেক্রেটারি নুর আহমদ প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, খননের পর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, খাল পরিষ্কারের পর আবারও ময়লা ফেলা হচ্ছে। সেটা করলে খাল পরিষ্কার করে লাভ নেই। আমরা ১০ হাজারের মতো ডাস্টবিন দিয়েছি। এখন থেকে সেগুলোতে ময়লা ফেলবেন। আমরা বিভাগীয় কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছি ময়লা বিনে না ফেললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। বিন হারিয়ে গেলে যার এলাকা থেকে হারিয়ে যাবে তাকে জরিমানা দিতে হবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে যা কিছু করা দরকার সবকিছু আমরা করব। যে বা যারা কাজ করতে আগ্রহী সবাইকে আমরা কাজ করার সুযোগ দিয়েছি। এখন নাগরিকদের পালা, খালকে পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব তাদের। একদিকে খাল খনন করার পর আরেক দিকে ময়লা ফেলা হলে কাজের কাজ কিছু হবে না। উপদেষ্টা নগরবাসীর কাছে জলাবদ্ধতা নিরসনের সহযোগিতা কামনা করেন।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সবাইকে নিয়ে আমরা নগরকে গ্রিন, হেলদি সিটি করার কাজ করছি। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একসাথে নিয়ে কাজ করতে চাই। তাহলেই আমরা শহরকে সুন্দর রাখতে পারব। বির্জাখালের খনন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করায় আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

মহানগরী আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ২৪ দিনের মাথায় উপদেষ্টা আমাদের কার্যক্রম পরিদর্শনে আসায় আমাদের নেতাকর্মীরা উৎসাহিত হয়েছেন। এটা তিন হাজার ফুট, আমরা প্রায় ১৮শ’ ফুট কাজ শেষ করেছি। বাকি অংশটুকু আমরা ঈদুল আজহার আগে শেষ করতে পারব। এলাকাবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা এখন যেভাবে সহযোগিতা করছেন আগামী দিনের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সেভাবে সহযোগিতা করবেন। সমাবেশের আগে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বির্জাখালের খনন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নততা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। কাজের অগ্রগতি দেখে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের সাবেক পরিচালকের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
পরবর্তী নিবন্ধ৩৬ বছর পর চবিতে আসছেন ড. ইউনূস