করোনা মহামারী কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। চট্টগ্রামেও একই অবস্থা। ঢাকার পরে অন্য জেলার তুলনায় এখানে আক্রান্ত ও মৃত্যু বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম জেলায় ১ হাজার ৮৯ টি নমুনা পরীক্ষা হয়। এর মধ্যে নতুন ৩৬৯ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ৩৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এর মধ্যে নগরীর বাসিন্দা ২২৩ ও উপজেলার ১৪৬ জন। এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৬০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নতুন ৩৬৯ জনসহ চট্টগ্রামে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬০ হাজার ৩৬৮ জন। এর মধ্যে নগরীর বাসিন্দা রয়েছে ৪৬ হাজার ৯৬৭ জন ও উপজেলার ১৩ হাজার ৪০১ জন।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় চট্টগ্রামে আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে নগরীর বাসিন্দা ২ জন ও উপজেলার ৪ জন। এ নিয়ে এ অঞ্চলে করোনায় ৭১৭ জন মারা গেছে। যার মধ্যে নগরীর বাসিন্দা ৪৮১ জন ও উপজেলার ২৩৬ জন। নতুন ৬ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে চলতি মাসের প্রথম তিনদিনে ১১ জনের মৃত্যু হয়। মৃত্যু, সংক্রমণের সংখ্যা ও হার মাঝের ২৪ ঘণ্টায় কিছুটা কমলেও আবার বেড়েছে। ১ জুলাই ৪২১ জনের নমুনায় করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্তের দিনে সংক্রমণ হার ছিল সর্বোচ্চ ৩৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। সংখ্যার বিচারে ৩০ জুন করোনাকালের সর্বোচ্চ ৫৫২ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়।
এদিকে, গত তিন দিনে করোনায় আক্রান্ত এক হাজার পূর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছে সিভিল সার্জন অফিস। এর আগে ৩০ জুন দুই দিনে আক্রান্ত সংখ্যা এক হাজার পূর্ণ হয়েছিল। দুই দিনে এক হাজার পূর্ণ হয় আরো একবার ১৪ এপ্রিল, মোট আক্রান্ত ৪৬ হাজার অতিক্রম করাকালে। সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ১৬ দিনে ১ হাজার পূর্ণ হয়ে ৩৩ হাজার অতিক্রম করে ৩১ জানুয়ারি। সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর জায়গায় প্রতিদিন সুস্থ হচ্ছেন অনেকে। চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছে নতুন ১৫৯ জন। মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৪৯ হাজার ৯০৫ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ৬ হাজার ৬৪০ জন এবং ঘরে থেকে চিকিৎসা নিয়েছে ৪৩ হাজার ২৬৫ জন।
সিভিল সার্জন অফিসসূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হয় ১৫৫ জন ও ছাড়পত্র নেয় ১৪০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ১ হাজার ৫৭৩ জন। সিভিল সার্জন অফিসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে আক্রান্তদের মধ্যে সীতাকুণ্ডে সর্বোচ্চ ৩৫, ফটিকছড়িতে ২৩, হাটহাজারীতে ২০, মীরসরাইয়ে ১৯, চন্দনাইশে ১০, রাঙ্গুনিয়া ও রাউজানে ৮ জন করে, সাতকানিয়ায় ৬, বোয়ালখালীতে ৫, লোহাগাড়া, বাঁশখালী ও পটিয়ায় ৪ জন করে রয়েছেন। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি গতকাল রোববার আজাদীকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।