চট্টগ্রামে ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে গ্যাস ও তেল সংকটের কারণে ৫টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। কাপ্তাই এবং টেকনাফ সোলার প্লান্ট দুটি বন্ধ রয়েছে দীর্ঘ দিন থেকে। এছাড়া দেশের একমাত্র কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে পানির স্বল্পতায় ৪টি ইউনিটই বন্ধ রয়েছে।
শুধুমাত্র একটি ইউনিট (২ নম্বর ইউনিট) থেকে মাত্র ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। ৯১৭ মেগাওয়াটের এই ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে বাকী ১৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু থাকলেও এর মধ্যে অনেক গুলো কেন্দ্র কোন রকমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। এই ১৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে মাত্র ৮১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
পিডিবি চট্টগ্রামে আঞ্চলের বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং বিতরণ তালিকায় দেখা যায়, রাউজান ২১০ মেগাওয়াটের দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৪২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। গ্যাস সংকটের কারণে এখন দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রই বন্ধ রয়েছে। ২৪ মেগাওয়াটের রিজেন্ট পাওয়ার প্লান্ট বন্ধ, ১৫০ মেগাওয়াটের শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ, ১০০ মেগাওয়াটের এনার্জি প্যাক বন্ধ রয়েছে। এই কারণে শীতের এই মৌসুমেও বিদ্যুতের লোডশেডিং চলছে। আগের মতো তীব্র না হলেও বিদ্যুতের আসা–যাওয়ার ভোগান্তিতে আছে নগরবাসী। বিদ্যুতের পাশাপাশি নগরীর বিশাল এলাকা জুড়ে সকল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা–তিনটা পর্যন্ত গ্যাস সংকটে ভুগছে নগরবাসী।
কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র জানায়, কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে পানি স্বল্পতায় ৪টি ইউনিটই বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র একটি ইউনিট (২ নম্বর ইউনিট) থেকে মাত্র ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কাপ্তাই লেকের পানির পরিমাণ ছিল ৮৫ দশমিক ৬৩ মিনস সিলেভ (এমএসএল)। লেকে রুল কার্ভ অনুযায়ী বর্তমানে পানি থাকার কথা ১০১ দশমিক ২১ মিনস লি লেভেল।
কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, পানির উপর নির্ভরশীল কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ পাঁচটি ইউনিটে দৈনিক ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। লেকে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় দেশের একমাত্র জল বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন সর্বনিম্ন পর্যায়ে এসেছে। কাপ্তাই লেকে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার ফলে কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে শুধুমাত্র ২ নম্বর ইউনিট চালু রয়েছে। ১ নম্বর ইউনিট ত্রুটির কারণে দীর্ঘ দিন উৎপাদন বন্ধ ছিল। বর্তমানে ইউনিটটি সংস্কার করে সচল করা হয়েছে বলে জানা যায়। কাপ্তাই লেকে পানি স্বল্পতায় ১, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ইউনিট চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
গত আগস্ট–অক্টোবর মাসে বিদ্যুতের চরম ভোগান্তির পর নভেম্বর থেকে এই সংকট ক্রমশ কমতে থাকে। নভেম্বর–ডিসেম্বর বিদ্যুতের তেমন কোন সমস্যা দেখা যায়নি। হঠাৎ করে গত কয়েকদিন বিদ্যুতের আবার আসা–যাওয়া শুরু হয়েছে। পিডিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের তথ্য মতে– চট্টগ্রামে এখন কোন লোডশেডিং নেই। চট্টগ্রামে সরকারি–বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলো থেকে ৮১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। চাহিদাও রয়েছে ৮১২ মেগাওয়াট।












