চট্টগ্রামে সরকারি হাসপাতালে এখনো আসেনি কিট

চিকুনগুনিয়া দেড় মাসে দুই হাজার ছাড়ালো আক্রান্ত

জাহেদুল কবির | বৃহস্পতিবার , ২১ আগস্ট, ২০২৫ at ৬:২৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত বাড়ছে চিকুনগুনিয়ার রোগী। মশাবাহিত রোগটি নিয়ে উদ্বিগ্ন চট্টগ্রমের স্বাস্থ্য বিভাগ। গত দেড় মাস ধরে চিকুনগুনিয়ার হার বাড়লেও এখনো সরকারি পর্যায়ে পরীক্ষা চালু করা যাচ্ছে না। গত মাসের শেষের দিকে চিকুনগুনিয়া পরীক্ষার রেপিড টেস্ট কিট সরবরাহের অনুরোধ জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি লিখেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম। সেই চিঠির তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো ইতিবাচক কোনো খবর দিতে পারছে না সিভিল সার্জন কার্যালয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ বেসরকারি ল্যাবে চিকুনগুনিয়ার পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করে দেয় সাড়ে ৪ হাজার টাকা। এখন একজন গরীব কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত রোগীর পক্ষে বেসরকারি ল্যাবে গিয়ে সাড়ে ৪ হাজার এই পরীক্ষা করা সম্ভব না।

কারণ শুধুমাত্র ডাক্তারের ফি দিতে না পেরে এসব রোগীরা সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে ভিড় করেন। তাই গরীব ও নিম্ন রোগীদের চিকুনগুনিয়া পরীক্ষা করার জন্য ডাক্তাররা উপদেশ দিলেও বেশিরভাগই করান না। এখন সরকারি হাসপাতালে যদি চিকুনগুনিয়ার রেপিড টেস্ট কিট সরবরাহ করা হয়, তবে ৩০০ টাকা খরচ করে সবশ্রেণীর রোগীরা পরীক্ষাটি করাতে পারবেন।

এদিকে চট্টগ্রাম জেলার সিভিল কার্যালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী গতকাল নতুন করে আরো ৪৮ জনের চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন চিকুনগুনিয়া মোট আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ২৬১ জন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জ্বর থাকলেও সর্দি কাশি থাকে না। রোগীদের গায়ে ব্যথা থাকে। গায়ে ফুসকুড়ি (র‌্যাশ) থাকতে পারে, নাও থাকতে পারে। শরীরে তীব্র ব্যথা থাকে। ব্যথার মাত্রা এত বেশি থাকে যে রোগী হাঁটতে পারেন না। চিকুনগুনিয়ায় মৃত্যুঝুঁকি কম, কষ্ট বেশি। চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৭০ শতাংশ এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যান। ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগী তিন মাস পর্যন্ত অসুস্থ থাকতে পারেন, গায়ে ব্যথা থাকতে পারে। ৫ থেকে ৭ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে সুস্থ হতে বছরের পর বছর লেগে যেতে পারে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চিকুনগুনিয়া প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। তাই আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে রেপিড টেস্ট কিট চেয়ে গত ২৮ জুলাই চিঠি লিখেছিলাম তখন আক্রান্ত চট্টগ্রামে আক্রান্ত ছিল ৮০৩ জন। এখন দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আমরা যোগাযোগ করেছি, কখন কিট পাবো সেটি এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি।

এদিকে চমেক হাসপাতালের কয়েকজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বলছেন, তাদের কাছে যেসব রোগী আসছেন এর মধ্যে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশই হচ্ছে জ্বরের রোগী। চিকুনগুনিয়া পরীক্ষা দেয়ার পরে অনেক রোগী শুধু টাকার জন্য পরীক্ষা করাতে পারছেন না। তাই সরকারি পর্যায়ে চিকুনগুনিয়া পরীক্ষা শুরু হলে রোগীরাও উপকৃত হতো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধচাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে মুখোশধারীদের গুলিবর্ষণ