সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রামে আরও একটি মামলা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে সরকারের পতনের পর এই নিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে তিনটি হত্যা মামলা রুজু হলো। নগরীর চান্দগাঁও থানায় মঙ্গলবার গভীর রাতে মামলাটি দায়ের করেন মো. ফজলে রাব্বী নামে নিহত এক যুবকের বাবা মোহাম্মদ সেলিম। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, এম এ সালাম, মহিউদ্দীন বাচ্চু, এস এম আবদুল্লাহ আল মামুন, খোরশেদ আলম সুজন ছাড়াও ২৮ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীসহ ২৭০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
চান্দগাঁও থানার ওসি জাহিদুল কবীর গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, মোহাম্মদ সেলিম নামে এক ব্যক্তি বাদি হয়ে মঙ্গলবার রাতে মামলা করেছেন। তিনি এজাহারে উল্লেখ করেছেন যে, গত ৪ অগাস্ট আন্দোলনে তার ছেলে নিহত হয়েছে। তবে ৪ অগাস্ট চান্দগাঁও এলাকায় কারো মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা আগে জানতাম না। আমাদের কাছে কোন রেকর্ডপত্র নেই। কেউ আমাদের অবহিতও করেনি। এজাহার দেওয়ার পর আমরা মৃত্যুর বিষয়টি জেনেছি। এখন তদন্ত করে বিষয়টি সম্পর্কে আমরা আরো নিশ্চিত হবো।
মামলার বাদী মোহাম্মদ সেলিম এজাহারে উল্লেখ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৪ অগাস্ট বিকালে চান্দগাঁও এলাকায় সমাবেশ চলছিল। সেখানে অংশ নেয়ার জন্য তার ছেলে ফজলে রাব্বী বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার মোড়ে অবস্থান করছিলেন। এ সময় মামলায় উল্লেখিত ১ থেকে ১১ নম্বর আসামির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে ও বোমা বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ করে এবং সমাবেশে হামলা চালায়। এতে অনেক লোক হতাহত হয়। তাদের ছোড়া গুলিতে ফজলে রাব্বীর পেটে ও বাম কানে লাগলে তিনি লুটিয়ে পড়ে। পরে সমাবেশে থাকা শিক্ষার্থীরা রাব্বীকে ওআর নিজাম রোডের বেসরকারি একটি হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে গত ১৭ ও ১৯ অগাস্ট চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ থানায় আরও দুইটি হত্যা মামলায় প্রধান আসামি করা হয় শেখ হাসিনাকে।