চট্টগ্রামে পঞ্চাশবার তোপধ্বনির মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু

এম এ আজিজ স্টেডিয়াম ও প্যারেড মাঠে শপথ অনুষ্ঠান

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:৪৭ পূর্বাহ্ণ

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মুখস্থ চত্বরে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে সূচিত হবে বিজয়ের কর্মসূচি। এরপর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। গতকাল বুধবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের এই অনন্য সময়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন। নতুন প্রজন্মসহ সকলকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিখায় আলোকিত এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করার মহতী লক্ষে শপথ অনুষ্ঠান আয়োজনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে দেশব্যাপী উক্ত শপথ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় শপথ অনুষ্ঠান নগরীর এমএ আজিজ স্টেডিয়াম ও প্যারেড ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ১৬ ডিসেম্বর ও ১৭ ডিসেম্বর বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে জেলা প্রশাসনের নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচির চিত্রও তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক। সেগুলো হলো সড়কসহ নগরীর সকল সরকারি-বেসরকারি ভবনগুলোতে আলোকসজ্জাকরণ। সরকারি-বেসরকারি, বানিজ্যিক ও আবাসিক সকল ভবনে নির্ধারিত মান ও রংয়ের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা। ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৮ টায় এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। এরপর বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, বিএনসিসি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, কারারক্ষী, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ স্কাউটস, রোভার স্কাউটস, গার্লস গাইড এবং শিশু-কিশোর সংগঠন কর্তৃক বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মুখস্থ শেখ রাসেল চত্বরে সংবর্ধনা প্রদান করা হবে।
বিকেল সাড়ে ৩ টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সব পেশাজীবী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সদস্য, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, নারী, কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-ছাত্রীসহ সমাজের সর্বস্তরের ৪ হাজার মানুষ নির্ধারিত আসনে নির্ধারিত টি-শার্ট, ক্যাপ, জাতীয় পতাকা ও মাস্ক পরে অবস্থান ও শপথগ্রহণ করবেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের স্ব-স্ব বাহিনীর ইউনিফর্মে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম পরে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত থাকবেন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান/সংগঠনসমূহ তাদের স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে ইউনিফর্ম (যদি থাকে) পরে স্টেডিয়ামে ঢুকবেন।
গ্যালারির দর্শকদের কোন গেইট দিয়ে প্রবেশ করতে হবে তা ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তারা জানিয়ে দেবেন। স্টেডিয়ামের প্রবেশমুখে আসন ব্যবস্থাপনাসহ দৃশ্যমান থাকবে। স্টেডিয়ামের গ্যালরিতে প্রবেশের সময় মোবাইল, মানিব্যাগ ছাড়া অন্য কোনো সামগ্রী (যেমন ব্যাগ, কলম, খাবার, মূল্যবান অলঙ্কারাদি, পাওয়ার ব্যাংক, হেডফোন, খাতা ইত্যাদি) সঙ্গে রাখা যাবে না।
১৭ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ৯টি জনপ্রিয় ব্যান্ডদলের অংশগ্রহণে ‘বিজয় কনসার্ট’ অনুষ্ঠিত হবে। ব্যান্ডদল হচ্ছে অর্থহীন, শিরোনামহীন, ভাইকিং, সোলস, ওয়ারফেইজ, অ্যাভয়েডরাফা, আরভোভাইরাস, আর্টসেল ও তীরন্দাজ। জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে যৌথভাবে এ বিজয় কনসার্ট আয়োজন। কনসার্টে সম্ভাব্য ১৫ হাজার দর্শক বিনামূল্যে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে গ্যালারিতে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন। এ সময় দেড় হাজার আমন্ত্রিত অতিথি স্টেডিয়ামের ভেতরে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন। কনসার্টে বাইরে থেকে খাবার বা পানির বোতল নিয়ে মূল ফটকে প্রবেশ নিষিদ্ধ। শ্রোতাদের জন্য স্টেডিয়ামের ভেতরে অস্থায়ী হালকা খাবারের দোকান থাকবে।
অনুষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ, আনসার বাহিনী ও র‌্যাব সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। কনসার্টের প্রবেশপথ থেকে ও অন্য গেইটগুলোতে ৪২০ জন স্বেচ্ছাসেবক বিএনসিসি, স্কাউটস, রোভার স্কাউটস, গার্লস গাইড নিয়োজিত থাকবে। কনসার্টটি ফেইসবুকসহ স্যোসাল মিডিয়া ও ক্যাবলটিভিতে লাইভ প্রচারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সিএমপি কর্তৃক মোতায়েন থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউন্নয়নের যে পথে চট্টগ্রাম
পরবর্তী নিবন্ধগৌরব ও অগ্রযাত্রার ৫০ বছর