চট্টগ্রামে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন গ্রাহকরা। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে গত বুধবার অনুষ্ঠিত সভা থেকে এই দাবি জানানো হয়েছে। কেজিডিসিএল–এর শিল্প, বাণিজ্যিক, সিএনজি এবং আবাসনসহ বিভিন্ন শ্রেণির গ্রাহক প্রতিনিধি ও স্টেকহোল্ডারদের সাথে অনুষ্ঠিত উক্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি। কেজিডিসিএল–এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সাম্প্রতিক গ্যাস দুর্ভোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে গ্যাসের চাহিদার প্রেক্ষিতে সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে সভায় উপস্থিত স্টেকহোল্ডারগণ চট্টগ্রামে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানান। সভায় কেজিডিসিএলের কর্মকর্তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে তথা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় জ্বালানি নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সরকারি সিদ্ধান্তে এলএনজি টার্মিনাল গভীর সমুদ্রে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়। যার ফলে কেজিডিসিএল বিতরণ নেটওয়ার্কে এলএনজি সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় অতি দ্রুত গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে আসে। সভায় এক প্রশ্নের জবাবে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, জাতীয় গ্রিড থেকে চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন কথাটি সঠিক নয়। চট্টগ্রাম গ্যাস বিতরণ নেটওয়ার্ক জাতীয় গ্রিডের সাথে সংযুক্ত আছে, তবে বাস্তবতা হচ্ছে আগে দেশের বিভিন্ন গ্যাস ক্ষেত্র হতে জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ করা হতো, বর্তমানে এলএনজি সোর্স হতে চট্টগ্রাম অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে এলএনজি সরবরাহ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার ঘূর্ণিঝড় হয়েছে কিন্তু এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হয়নি। এলএনজির ৭০০–৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুধু চট্টগ্রাম নয়, সারাদেশে এর প্রভাব পড়েছে। সভায় স্টেকহোল্ডারদের বক্তব্য সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া হবে বলে আশ্বাস দেন ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি। তিনি বলেন, দেশকে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত রাষ্ট্রে উন্নীত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নিরলসভাবে কাজ করছেন। সে লক্ষ্যে দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলের শিল্প প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মেটাতে দেশীয় উৎস হতে গ্যাস অনুসন্ধান প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে ও এলএনজি আমদানি অব্যাহত রাখা হচ্ছে। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, পিডিবির প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম সহ চট্টগ্রাম চেম্বার, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন এন্ড কনভারশন ওয়ার্কশপ ওনার্স এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিগণ। অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন কেজিডিসিএল–এর সকল ডিভিশন প্রধান, কেজিডিসিএল অফিসার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন ও সিবিএ নেতৃবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ।