সরকার চট্টগ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত বলে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনকে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়ে সিটি মেয়র সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে এ কথা বলেন উপদেষ্টা। তিনি চট্টগ্রামে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন এবং সম্ভাব্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এসময় মেয়র জলাবদ্ধতা নিরসনে চসিকের প্রস্তাবিত ২৯৮ কোটি প্রদানে উপদেষ্টার সহযোগিতা চান। তিনি উপদেষ্টাকে জানান, চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা দীর্ঘদিন ধরে একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ রূপ নেয়। এ সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে নগরবাসীর দুর্ভোগ আরও বাড়বে। সিটি কর্পোরেশন আশা করছে, প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতামুক্ত করা সম্ভব হবে
ডা. শাহাদাত হোসেন উপদেষ্টাকে জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাস্তবায়নে ২৯৮ কোটি টাকা প্রয়োজন। কারণ, নালা–খাল পরিষ্কার করতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও মাটি–বর্জ্য উত্তোলন ও অপসারণের গাড়ি প্রয়োজন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা সমস্যা দীর্ঘদিনের, যা নগরবাসীর দৈনন্দিন জীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া গেলে অতি দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
এসময় জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা হয়। মেয়র জানান, শহরের বিভিন্ন খাল পুনঃখনন ও সংস্কার, নতুন ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ, বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য আধুনিক পাম্প স্টেশন স্থাপন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, নগরের জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
উপদেষ্টাকে মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা শুধু বর্ষাকালের সমস্যা নয়, এটি একটি সারা বছরের দুর্ভোগ। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য আমরা একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়েছি, যার জন্য পর্যাপ্ত বাজেট ও সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। চট্টগ্রাম শহরের ৭০ লাখ বাসিন্দার দুর্ভোগ লাঘব করতে আমি নগরপিতা হিসেবে নয়, বরং নগরসেবক হিসেবে কাজ করতে চাই।
শাহাদাত বলেন, জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধান করে চট্টগ্রামকে পরিকল্পিত শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। বর্তমান সময়ে আমাদের উন্নয়নের পথে বড় বাধা হলো সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। আমি চাই, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা একসঙ্গে কাজ করুক, যাতে প্রকল্প বাস্তবায়ন দ্রুত ও কার্যকরভাবে হয়। এক্ষেত্রে চট্টগ্রামের সবগুলো সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থা প্রতিবছর একটি সমন্বিত কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করলে জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত সাফল্য আসবে।