রাত পোহালেই চট্টগ্রাম–১০ আসনের উপনির্বাচন। গতকাল রাত ১২টায় এই আসনের উপ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রচার–প্রচারণা শেষ হয়েছে। আগামীকাল ৩০ জুলাই সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১৫৬টি কেন্দ্রের ১২৫১টি বুথে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের জন্য এরইমধ্যে ১ হাজার ৪০৭টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। ভোটগ্রহণের জন্য ৪ হাজার ১০৬ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা এবং ২ হাজার ১১০টি ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পুলিশি নিরাপত্তায় আজ দুপুরের পর থেকে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসারদের তত্ত্বাবধানে কেন্দ্রে কেন্দ্রে যাবে ইভিএমসহ নির্বাচনী সামগ্রী।
চট্টগ্রাম–১০ আসনের উপ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু (নৌকা)সহ মোট ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন–জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. সামসুল আলম (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের রশীদ মিয়া (ছড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আরমান আলী (বেলুন) ও মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া (রকেট)।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে জানা গেছে, নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃক্সখলা রক্ষা এবং মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সাথে দায়িত্ব পালনসহ আইনশৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আইনানুগ নির্দেশনা প্রদানের জন্য ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দায়িত্ব বণ্টন করে দেন।
উপনির্বাচনের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে ভোটকেন্দ্রে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। এরইমধ্যে ১ হাজার ৪০৭টি ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে এবং বুথে ভোটের দিন প্রার্থী এবং সমর্থকরা গিয়ে কোনও ধরনের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে সিসি টিভি ক্যামেরা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচনের দিন ভোটকক্ষের পরিস্থিতি মনিটরিং করার লক্ষ্যে ভোটকেন্দ্র নম্বর ও কক্ষ নম্বর লেখা থাকবে। যাতে মনিটরিং কক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরায় ভোটকেন্দ্রের নম্বর ও কক্ষ নম্বর স্পষ্ট বোঝা যায়। এ ভোটকেন্দ্র ও কক্ষ নম্বর দেখেই প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান আজাদীকে বলেন, ৩০ জুলাই সকাল ৮টা থেকে একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১৫৬টি কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ১৫৬টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে ১৬ থেকে ১৭জন পুলিশ এবং আনসার দায়িত্ব পালন করবেন। অপরদিকে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ১৭ থেকে ১৮জন পুলিশ–আনসার দায়িত্বপালন করবেন। পুলিশ এবং এপিবিএনের সমন্বয়ে ৮ ওয়ার্ডে ৮টি মোবাইল ফোর্স থাকবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে ৪টি, র্যাবের ৪টি টিম থাকবে (প্রতি ২ ওয়ার্ডে ১টি করে), বিজিবি থাকবে ৪ প্লাটুন (প্রতি ২ ওয়ার্ডে ১টি করে)।
ভোটের দিন নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং কর্মকর্তার সম্মেলন কক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরায় ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। ভোটকেন্দ্রে কোনও প্রার্থী যাতে উত্তাপ ছড়াতে না পারে সেদিকে কঠোর নজরদারি থাকবে। কোনও কেন্দ্রে কোনও প্রার্থী কিংবা তার সমর্থকরা প্রভাব বিস্তার বা আইনভঙ্গ করার চেষ্টা করলে সাথে সাথেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম–১০ আসনের উপ নির্বাচনে ১৫৬টি কেন্দ্রের ১২৫১টি বুথে ভোটগ্রহণের জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ১৬৪জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১৩১৪জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ২৬২৮জন পোলিং অফিসার ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবেন। শনিবার প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারগণ নির্বাচনী সামগ্রী নিয়ে আইনশৃক্সখলা বাহিনীর সমন্বয়ে কেন্দ্রে কেন্দ্রে অবস্থান করবেন। ভোটগ্রহণের জন্য ২ হাজার ১১০টি ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।