চট্টগ্রাম বন্দরে ইউএস কোস্টগার্ডের প্রতিনিধিদল

বিএম ডিপোসহ সহায়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও দেখবে

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২২ জুন, ২০২২ at ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড এবং বিস্ফোরণের ঘটনার জের ধরে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে এসেছে ইউএস (যুক্তরাষ্ট্র) কোস্টগার্ডের একটি প্রতিনিধি দল। বিএম ডিপোসহ বন্দরের সহায়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করতে ইন্টারন্যাশনাল শিপ এন্ড পোর্ট ফ্যাসিলিটি সিকিউরিটি (আইএসপিএস) কোড বাস্তবায়নকারী সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের দলটি বাংলাদেশ সফরে এসেছে।

বন্দর সূত্র জানিয়েছে, আইএসপিএস প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের সদস্যরা চট্টগ্রাম বন্দর এবং বিভিন্ন ডিপো পরিদর্শন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কোনো ঘাটতি আছে কিনা তা পরখ করে দেখবেন। কোথাও নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি শনাক্ত হলে তা বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করবে সংস্থাটি। এরপর আগামী আগস্টে চূড়ান্ত পরিদর্শনে আসবে সংস্থাটি। এখন করে যাওয়া সুপারিশগুলো ওই সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। এরপরও কোনো ধরনের ঘাটতি থেকে গেলে তা মোকাবেলার অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করে দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের এই সফর সম্পর্কে চট্টগ্রাম বন্দরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আইএসপিএস কোড বাস্তবায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকা যেসব দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে, সেসব দেশে ‘আন্তর্জাতিক বন্দর নিরাপত্তা কর্মসূচি’র আওতায় বন্দর ও বন্দর সহায়ক স্থাপনার নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে। আন্তর্জাতিক নৌ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আইএসপিএস কোড (জাহাজ ও বন্দর স্থাপনার নিরাপত্তা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম) বাস্তবায়নকে প্রাধান্য দেয়া হয়। আইএসপিএস কোড যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা না হলে ওইসব দেশ থেকে আমেরিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ার মতো নজিরও রয়েছে। সমুদ্রে নাবিকদের জীবনের নিরাপত্তাবিষয়ক কনভেশন সেফটি অব লাইফ অ্যাট সি বা সোলাসের আওতায় আইএসপিএস কোড রয়েছে। ২০০৪ সালের ১ জুলাই থেকে বাংলাদেশ এই কোড বাস্তবায়ন করছে।
নৌপরিবহন অধিদপ্তর ও বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে এসেছে। গতকালই তারা বন্দর পরিদর্শন করেছে। দলটি আজ (বুধবার) বিএম ডিপোসহ বন্দর সহায়ক স্থাপনা পরিদর্শনের কথা রয়েছে। পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধিদল তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরবে।

এর আগে ২০১৭ সালে বন্দর পরিদর্শন করে মার্কিন প্রতিনিধিদলটি ১৬ দফা পর্যবেক্ষণ দিয়েছিল। সেই ১৬ দফা পর্যবেক্ষণের বাস্তবায়ন অগ্রগতি দেখতে ২০১৯ সালে পরিদর্শনে আসে তারা। তখন বন্দরের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রতিনিধিদলটি। এরপরও সাইবার নিরাপত্তায় গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানায়। আবার পণ্য খালাস নিতে আসা গাড়ির চালক ও সহকারীদের দীর্ঘ সময় বন্দরের সংরক্ষিত এলাকায় অবস্থানকে নিরাপত্তা ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করে তারা। করোনার কারণে দুই বছর বন্দর পরিদর্শন করেনি প্রতিনিধিদলটি। দুই বছর পরে এবারকার পরিদর্শনে নতুন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থার খুঁটিনাটি সবকিছুই প্রতিনিধিদলটি দেখবে বলেও মনে করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম বন্দর আইএসপিএস কোড বাস্তবায়নে সফল একটি সংস্থা বলে উল্লেখ করে সূত্র বলেছে, বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সুদৃঢ়। নিরাপত্তা নিয়ে তেমন উদ্বেগের কিছু নেই। তবে বন্দর সহায়ক প্রতিষ্ঠানগুলোতে কিছু ঘাটতি থাকতে পারে। আর বিএম ডিপোর বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড এই ঘাটতিকে যেন প্রকট করে তুলেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসামিহার মৃত্যুতে কাঁদল সবাই
পরবর্তী নিবন্ধপটিয়ায় ২ ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ