ফেনীর বন্যা দুর্গত এলাকায় একটি রিলিফ ট্রেনের সাথে তিনটি বগিতে ত্রাণ নিয়ে গেছেন রেলওয়ে পূর্র্বাঞ্চলের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের একটি টিম। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় পাহাড়তলী স্টেশন থেকে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে ট্রেনটি ফেনী বন্যা দুর্গত এলাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
মূলত রেল কর্মকর্তা–কর্মচারীদের নিজস্ব উদ্যোগের পাশাপাশি আগ্রহী যারা রেল স্টেশনে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন তাদের ত্রাণ নিয়ে যাওয়া হয়েছে এই ট্রেনে করে। প্রায় ৬ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে রান্না করা খিচুরি, শুকনো খাবার, পানি–বাচ্চাদের দুধ এবং কাপড় বিতরণ করা হয়। শুকনো খাবারের সাথে রান্না করা ৬শ প্যাকেট খিচুড়িও নিয়ে বিতরণ করা হয়েছে।
ত্রাণ বিতরণ করতে যাওয়া বিভাগীয় দুই কর্মকর্তা আজাদীকে বলেন, ট্রেনটি ফেনীর ফাজিলপুরের কাছকাছি গিয়ে আর যেতে পারেনি রেললাইন পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে। ফেনীর ফাজিলপুরের আগে ত্রাণের লাগেজ ভ্যানটি দাঁড় করিয়ে রিলিফ ট্রেনটি পরে যাওয়া মালবাহী ট্রেনের বগিটি উদ্ধারে চলে যায়।
এসময় ফাজিলপুরের কাছে রেলের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা বন্যা দুর্গত লোকজনের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। সেখান থেকে ফেনীর চিমকী আস্তায় এসেও ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। বেশ কিছু ত্রাণ চিমকী আস্তায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে আসা হয়েছে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের দেয়ার জন্য।
এই ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সাজিদ হাসান নির্ঝর আজাদীকে বলেন, রেল লাইন চেক করার জন্য যে ট্রেনটি ফেনী আসছিল সেখানে একটি বগিতে ফেনীর বন্যা দুর্গত এলাকার লোকজনের জন্য ত্রাণ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রায় ৬ হাজারের মতো লোকজনের ত্রাণ নিয়ে গেছি। ফেনীর ফাজিলপুরের কাছকাছি গিয়ে সেখানে বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার–পানি–বাচ্চাদের দুধ এবং শুকনো কাপড় বিতরণ করা হয়েছে। এরপর সেখানে থেকে চিমকী আস্তানায় এসে সেখানে কিছু বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের মাঝে এসব শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আরো কিছু ত্রাণ সামগ্রী ছিল–সেগুলো আমরা চিমকী আস্তানায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে এসেছি বিতরণের জন্য। শুকনো খাবারের মধ্যে পাউরুটি, চিড়া–মুড়ি, পানি, বিস্কুট, মোমবাতি, জুস, গুঁড়ো দুধ, স্যালাইন ছিল। এছাড়া ছিল কাপড়ও।
রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানান, রিলিফ ট্রেনের সাথে তিনটি বগি ছিল। গত তিনদিন আগে ফেনীর ফাজিলপুরের কাছে একটি মালবাহী ট্রেনের একটি বগি পড়ে গিয়েছিল। গতকাল রিলিফ ট্রেনটি গিয়ে পড়ে যাওয়া বগিটি উদ্ধার করে।
ফেনী ও কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে রেললাইন পানিতে ডুবে যাওয়ায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলাচলরত আন্তঃনগরসহ সব ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় গত ২২ আগস্ট। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় রেললাইনের অবস্থা পর্যবেক্ষণে ইঞ্জিন ও তিনটি বগি নিয়ে পাহাড়তলী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে গেছে একটি ট্রেন।