চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ফারজাত হোসেন সজীব (৩৬) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত এসআই আলাউদ্দিন তালুকদার। চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সজীব মারা গেছেন। তবে নিহত সজীবের পরিবারের দাবি, তাকে মারধর করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও দাবি স্বজনদের। মৃত ফারজাত হোসেন সজীব (৩৬) নগরীর বকশিরহাট এলাকার রামজয় মহাজন লেইনের বাসিন্দা মো. রফিকের ছেলে। তাদের বাড়ি কুমিল্লা জেলায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সজীব একসময় বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। গত ২৬ মার্চ রাতে নগরীর কোতোয়ালী থানা পুলিশের অভিযানে সজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাকে ডাকাতির প্রস্তুতির একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজিরের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
সজীবের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কারাগার থেকে ফোন করে বলা হয়, সজীব কারাগারে মারামারিতে আহত হয়েছে। চিকিৎসার জন্য ২০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলা হয়। একই মোবাইল ফোন থেকে এর একটু পর বলা হয়, তার অবস্থা খারাপ, তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আমাদের সেখানে যেতে বলেন। আমরা তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে গিয়ে দেখি তার মরদেহ পড়ে আছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমার দুটো শিশু সন্তান। আমার স্বামী একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এখন আমি কোথায় যাবো।’
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল হোসেন বলেন, ‘সজীব ২৭ মার্চ থেকে কারাগারের যমুনা ভবনের সাত নম্বর ওয়ার্ডে ছিলেন। আজ (গতকাল) সকালে সজীব বুকে ব্যথা অনুভব করার কথা জানালে তাকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন। পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে যমুনা ভবনের সাত নম্বর সেলে গিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। সেখানে সকালে মারামারির কোনো অভিযোগ বা প্রমাণ পাইনি। অসুস্থ সজীব নিজে হেঁটে কারা হাসপাতালে গিয়েছিলেন। চমেক হাসপাতালে নেওয়ার পর সজীব গাড়ি থেকে নেমে হেঁটেই হাসপাতালে ঢুকেছিলেন।’
