ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন চাক্তাই খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা

রোদে শুকানো হচ্ছে আধা ভেজা পণ্য

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৭ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:১০ পূর্বাহ্ণ

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত চাক্তাই খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন। পানিতে ভিজে যাওয়া অনেক ভোগ্যপণ্য রোদে শুকিয়ে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন অনেকে। চাক্তাই খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, ৯১ এর প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড়েও এত পরিমাণ পানি উঠেনি। কোনো ধরনের ভারি বৃষ্টি ছাড়াই কেবল জোয়ারের পানিতে ব্যবসায়ীদের শত শত কোটি টাকার পণ্য নষ্ট হয়ে গেছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে চাক্তাই খাতুনগঞ্জে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা জোয়ারে পানিতে ভিজে যাওয়া মসলা জাতীয় পণ্য, পেঁয়াজ, মরিচ ও হলুদ রোদে শুকাচ্ছেন। মধ্যম চাক্তাইয়ে কথা হয় ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমানের সাথে। তিনি জানান, একেবারে নষ্ট পণ্য ফেলে দিতে হয়েছে। এছাড়া যেসব পণ্য আধা ভেজা সেগুলো রোদে শুকানো হচ্ছে। পুরোপুরি ভিজে যাওয়া পণ্যের গুণগত মান ঠিক থাকে না। এসব পণ্য কেউ কিনবে না।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজারের ব্যবসায়ী ইলিয়াছ উদ্দিন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে আমার অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। প্রচুর পরিমাণ পেঁয়াজ-রসুন ও আদার বস্তা ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। আমার মতো আরো ব্যবসায়ী এরকম ক্ষতির শিকার হয়েছেন। অনেক বস্তা আমি ইতিমধ্যে সরিয়ে ফেলেছি। পেঁয়াজ, রসুন ও আদা পানিতে সহজে নষ্ট হয়ে যায়। এরমধ্যে কিছু কিছু বস্তা থেকে খুলে রোদে শুকিয়েছি। তবে বেশিরভাগ পেঁয়াজের বস্তা ফেলে দিতে হয়েছে।
মধ্যম চাক্তাইয়ের হাজী জসিম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, জোয়ারের পানিতে আমার অন্তত অর্ধকোটি টাকার পণ্য নষ্ট হয়ে গেছে। আমার সব মসলাজাতীয় পণ্য। এগুলো দামী পণ্য হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণও বেশি হয়েছে। মসলা জাতীয় পণ্য রোদে শুকিয়ে বিক্রি করাটাও কঠিন। আমি এই মধ্যম চাক্তাইয়ে ব্যবসা করছি ২০ বছরের বেশি সময় ধরে। এত পরিমাণ পানি আমি দেখিনি। চোখের সামনে পণ্য ভাসতে দেখেছি। কিছুই করার ছিল না। চাক্তাই খালের জোয়ার প্রতিরোধক স্লুইচ গেটের নির্মাণ পুরোপুরি শেষ হয়ে গেলে আমাদের এই ক্ষতির মুখে পড়তে হতো না।
চাক্তাই সোবহান সওদাগর রোডের রফিক উল্লাহ রাইচ এজেন্সির বিক্রেতা সরোয়ার চৌধুরী বলেন, জোয়ারের পানিতে সোবহান সওদাগর রোড কোমর সমান পানিতে তলিয়ে যায়। এখানে রাইচ মিল ও চালের দোকান রয়েছে। জোয়ারের পানিতে প্রচুর চালের বস্তা নষ্ট হয়ে যায়। কিছু কিছু আধা ভেজা চালের বস্তা শুকানো হচ্ছে।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, জোয়ারের পানিতে যে ক্ষতি হয়েছে সেটি পুষিয়ে নিতে সময় লাগবে। কারণ এমনিতে ভোগ্যপণ্যের আমদানি খরচ বেড়ে গেছে। এরমধ্যে এখন আকস্মিক জোয়ারের পানির ধাক্কায় ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার পণ্য নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সিডিএ চাক্তাই খালের কর্ণফুলী মোহনায় স্লুইচ গেটের নির্মাণ কাজ শুরু করে, কিন্তু প্রায় সাড়ে চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো কাজ শেষ করতে পারেনি। যার ফলে জোয়ারের পানিতে এখনো ডুবছে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহযরত মুহাম্মদের (সা.) জীবনাদর্শ সমগ্র জাহানের জন্য শ্রেষ্ঠ সম্পদ
পরবর্তী নিবন্ধকাল মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে ইলিশ শিকার