গ্রেপ্তার এড়াতে চট্টগ্রাম এসেছিলেন যশোরের ‘বোমা জাহিদ’

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২০ অক্টোবর, ২০২২ at ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ

ধরা পড়ার হাত থেকে বাঁচতে যশোরের কুখ্যাত সন্ত্রাসী ‘বোমা জাহিদ’ পালিয়ে চট্টগ্রাম আসেন। র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য পরিচয়ে ইপিজেডে পোশাক কারখানায় নাইট গার্ডের চাকরি নেন। এক স্ত্রী থাকার পরও চট্টগ্রামে আরেকটা বিয়ে করেন এবং অপর একটি মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন।

অভিযোগ পেয়ে র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের একটি টিম তার গতিবিধি অনুসরণ করতে থাকে। অবশেষে যশোরের ‘বোমা জাহিদ’ গত মঙ্গলবার রাতে ধরা পড়েন। ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানা থেকে জাহিদ হাসান নামের ৪০ বছর বয়সী ওই সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়। জাহিদ হাসান যশোরের বাঘারপাড়া থানা এলাকার মৃত আকবর সরদারের ছেলে।

র‌্যাবের তথ্যানুযায়ি, যশোরের বাঘারপাড়া এলাকার জাহিদ হোসেন স্থানীয়দের কাছে ‘বোমা জাহিদ’ নামে পরিচিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, অস্ত্র, বিস্ফোরক, মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে নয়টি মামলা আছে বাঘারপাড়া ও যশোর কোতোয়ালী থানায়। এসব মামলায় তিনি পরোয়ানাভুক্ত। এছাড়া চট্টগ্রামের এক পোশাক কর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে ঢাকার রমনা থানায় আরো একটি মামলা রয়েছে তার।

র‌্যাব-৭’র জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে জাহিদ চট্টগ্রামে আছেন। যশোর থেকে পালিয়ে চট্টগ্রামে চলে আসার পর জাহিদ তার নাম বদলে ফেলেন। নাহিদুল ইসলাম সজীব পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন পোশাক কারখানায় প্রহরীর কাজ শুরু করেন। চাকরি নেওয়ার সময় নিজেকে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং র‌্যাবে কাজ করার অভিজ্ঞতার মিথ্যা তথ্য দিতেন। ইপিজেড এলাকায় বাসা ভাড়া করে পরিবার নিয়ে থাকেন। যশোরে এক স্ত্রী ও দুই সন্তান থাকার তথ্য গোপন করে চট্টগ্রামে আরেকটি বিয়ে করেন তিনি। দুই স্ত্রী থাকার পরও তিনি চট্টগ্রামে এক পোশাক শ্রমিকের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। গত আগস্টে তাকে বিয়ে করার কথা বলে এবং যশোরে নিজের বাড়িতে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ঢাকায় নিয়ে যান। সেখানে একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে ওই নারীকে হোটেল রুমে রেখে সাথে থাকা তিন হাজার ৮০০ টাকা ও স্বর্ণের চেইন নিয়ে সটকে পড়েন।

র‌্যাব কর্মকর্তা আবছার আরো বলেন, ওই নারী হোটেল থেকে বেরিয়ে এক ট্রাফিক পুলিশের সহায়তায় রমনা থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে যান। সেখানে ২ আগস্ট ধর্ষণের মামলা করেন। ওই মামলায় জাহিদের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল নাহিদুল ইসলাম সজীব। বাবার নাম অজ্ঞাত এবং মায়ের নাম লেখা হয়েছিল নুপুর বেগম। তিনি জানান, জাহিদকে ধরতে যশোরের পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে খোঁজ করছিলেন। পাশাপাশি র‌্যাবও তার বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছিল।

অবশেষে মঙ্গলবার রাতে তাকে চট্টগ্রাম ইপিজেডের এমজেডএম ফ্যাক্টরি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখানে তিনি মাস তিনেক আগে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যের ভুয়া পরিচয় দিয়ে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাতকানিয়ায় কৃষকের ৭০ পেঁপে গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা
পরবর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে নামছেন ৩ ম্যাজিস্ট্রেট