১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দের ০৫ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র দৈনিক আজাদী হাঁটি হাঁটি পা পা করে ঐতিহ্য এবং সফলতার ৬২ টি বসন্ত পার করে গৌরবের ৬৩ তম বর্ষে পা রাখল। একটি সংবাদপত্রের বয়স ৬৩ বছর! হ্যাঁ, নানান ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করে সময়ের পথ পরিক্রমায় আজ চট্টগ্রামসহ সমগ্র দেশের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে দৈনিক আজাদী নামের পত্রিকাটি। ১৯৭১ সালের ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তস্নাত মহান মুক্তিযুদ্ধে আজাদীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। যুদ্ধের সেই বিভীষিকাময় দিনগুলোতে অনেক ঝুঁকির মধ্যেও আজাদী তার পথ চলা বন্ধ করে নি। এজন্যই তো ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের পর ১৭ ডিসেম্বর একমাত্র দৈনিক আজাদী-ই ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ বলে দেশ স্বাধীনের সংবাদ প্রকাশের গৌরব অর্জন করেছিল।
সেই প্রতিষ্ঠার পর থেকে গতানুগতিক পথে না হেঁটে, সকল অশুভ, অকল্যাণ থেকে দূরে থেকে শৈশব, কৈশোরের মত আজ পড়ন্ত যৌবনে এসেও আজাদী পরিবারের সুন্দর ও কল্যাণের পথে চলার অবিরাম প্রয়াস লক্ষ্যণীয় পত্রিকাটির প্রতিটি সংবাদে। এটি নিঃসন্দেহে অন্যান্য পত্রিকাগুলোর জন্য একটি মডেল। নতুন প্রজন্মকে সাহিত্য এবং সংবাদপত্রপ্রেমী সর্বোপরি একজন মানসম্মত সাংবাদিক হিসেবে গড়ে তুলতে আজাদী অনস্বীকার্য। প্রতিদিনের নিয়মিত আয়োজন ‘সুখে দুঃখে ফেসবুকে’ বিভাগটির মাধ্যমে শুধু লেখক, সাহিত্যিক কিংবা সংবাদপ্রেমিদের নয়, বরং সর্বস্তরের জনসাধারণের মনের ভাষা প্রতিদিন হাজার লক্ষ জনের মাঝে তুলে ধরে যাচ্ছে দৈনিক আজাদী।
শুধু সংবাদ পরিবেশনের মাঝে সীমাবদ্ধ না থেকে চট্টগ্রামের শিক্ষা প্রসার, চিকিৎসা সেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান, অন্ধত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র বিমোচন, শীতার্ত, বন্যার্ত মানুষ এবং অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোসহ প্রয়োজনভেদে নানান জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আজাদী আজ একটি স্বতন্ত্রধর্মী প্রতিষ্ঠান। আজাদীর এই অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পত্রিকাটির সম্পাদক শ্রদ্ধেয় এম এ মালেক স্যার ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। একই সাথে বিগত সাত বছর ধরে সাংবাদিকদের মধ্যে সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবে সিআইপি তিনি। এই অর্জনগুলো আজাদী পরিবারের জন্য অনেক বেশি গৌরবের। আশা করি আজাদীর অর্জনের এই ধারা অব্যাহত থাকবে।