ছয় মাস আগে ঢাকার মেরুল বাড্ডা থেকে বিপুল অর্থ, অস্ত্র-মাদক ও সোনাসহ গ্রেপ্তার মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরসহ তিনজনের ১৭০টি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত। ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশ গতকাল মঙ্গলবার বাড্ডা থানায় দায়ের করা মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনের মামলায় এই আদেশ দেন। খবর বিডিনিউজের।
ব্যাংক হিসাব জব্দ হওয়া অপর দুজন হলেন- সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিক।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির পরিদর্শক মোহাম্মদ ছাদেক আলী ওই তিনজনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তা মঞ্জুর করেন।
গত ১১ মে বিকেলে সিআইডির পরিদর্শক মো. ইব্রাহিম হোসেন বাদী হয়ে মনিরের স্ত্রী রওশন আক্তার ও ছেলে রাফি হোসেনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনে বাড্ডা থানার এ মামলায় গত ১৯ মে মনিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডের পাঠায় আদালত।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- মনিরের বোন নাসিমা আক্তার, স্বামী হাসান আলী খান, মনিরের আরেক ভগ্নিপতি নাহিদ হোসেন, মনিরের সহযোগী আবদুল হামিদ, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন, রিয়াজের ভাই হায়দার আলী এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিক।
অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে গতবছর ২০ নভেম্বর রাত থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত মেরুল বাড্ডায় মনিরের ছয়তলা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৯ লাখ টাকা মূল্যমানের ১০টি দেশের মুদ্রাসহ ১ কোটি ৯ লাখ টাকা উদ্ধার করে র্যাব।
অভিযানে চার লিটার মদ, আট কেজি সোনা, একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ মনিরকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মনিরের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়। মামলাগুলো তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারেরর পর মনিরের ১ হাজার ৫০ কোটি টাকার উপর সম্পদের তথ্য পাওয়ার কথা জানায় র্যাব। বাড্ডা, নিকেতন, কেরানীগঞ্জ, উত্তরা ও নিকুঞ্জে দুইশর বেশি প্লট রয়েছে তার।
র্যাব জানায়, কার্যত সোনা চোরাচালানই ছিল মনিরের ব্যবসা, সেখানেই তার নাম হয় গোল্ডেন মনির। একসময় গামছা বিক্রি দিয়ে শুরু করে জমির ব্যবসাতেও মাফিয়া হয়ে ওঠে মনির হোসেন।