গোড়ার মাটি কেটে পাচার, ঝুঁকিতে শতবর্ষী গর্জন

লোহাগাড়ার চরম্বা ইউনিয়নের বিবিরবিলা এলাকা

মোহাম্মদ মারুফ, লোহাগাড়া | শনিবার , ১৫ মার্চ, ২০২৫ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

লোহাগাড়ায় রাতের আঁধারে পদুয়া রেঞ্জের টংকাবতী বনবিটের আওতাধীন সংরক্ষিত বনাঞ্চলের জায়গা থেকে মাটি কেটে পাচার করছে একটি প্রভাবশালী মহল। উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিবিরবিলা গর্জনতলী এলাকা থেকে দীর্ঘদিন যাবত এই মাটি কাটা হচ্ছে। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে শতবর্ষী বহু মাদারট্রি গর্জন গাছ।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন যাবত স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল রাতের আঁধারে এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি কেটে বিভিন্ন স্থানে পাচার করে আসছে। মাটি খেকোরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। প্রায় শতবছর পূর্বে বনবিভাগ সেখানে গর্জন বাগান করে। এরপর থেকে জায়গাটি গর্জনতলী নামে পরিচিত। গর্জনতলী এলাকাটি ছিল টিলা শ্রেণির। পর্যায়ক্রমে টিলা কেটে মাটি পাচার করতে করতে কিছু জায়গা নাল জমিতে পরিণত করে। সেই নাল জমি থেকে চলতি বছরও মাটি খেকোরা এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি কেটে রাতের আঁধারে পাচার করে। সুযোগ বুঝে কাটা হয় পাশের টিলা ও গাছের গোড়ার মাটি। নির্বিচারে এভাবে গাছের গোড়ার মাটি কেটে নেয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে বহু মাদারট্রি গর্জন গাছ। পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, গর্জনতলী এলাকায় একাধিক স্থানে কাটা হয়েছে মাটি। দিনের বেলায় সেখানে সুনশান নীরবতা। রাতেই চলে মাটি খেকোদের কর্মযজ্ঞ। বেপরোয়া মাটি পরিবহনের ফলে আশপাশের চলাচলের রাস্তা বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। বর্ষাকালে এসব সড়ক দিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। রাতে বেপরোয়া মাটিবাহী গাড়ি চলাচলের কারণে আশপাশের মানুষের ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। এভাবে বেপরোয়াভাবে গাছের গোড়া থেকে মাটি কাটায় আগামী বর্ষায় হেলে পড়তে পারে শতবর্ষী অনেক মাদারট্রি গর্জন গাছ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে সংরক্ষিত বনের জায়গা থেকে প্রভাবশালী মহল রাতের আঁধারে মাটি কাটে বলে অভিযোগ করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। চরম্বা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ওসমান গণি জানান, প্রায় শত বছর পূর্বে গর্জন গাছগুলো বনবিভাগ রোপণ করেছিল। ওই স্থানে সিংহভাগ জায়গা ছিল টিলা প্রকৃতির। পর্যায়ক্রমে মাটি কাটার ফলে জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন যাবত একটি প্রভাবশালী মহল গর্জনতলী এলাকা থেকে মাটি কেটে পাচার করে আসছে। তবে মাটি কাটার সাথে কারা জড়িত তিনি জানেন না।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের পদুয়া রেঞ্জের আওতাধীন টংকাবতী বন বিটের বিট কর্মকর্তা জান্নাতুল নাঈম জানান, বনবিভাগের জায়গা থেকে মাটি কাটার খবরে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তবে কতদিন যাবত ওই জায়গা থেকে মাটি কাটা হচ্ছে তিনি জানেন না। এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপটিয়ায় ২৫ হাজার হতদরিদ্রদের মাঝে কেডিএস গ্রুপের চাল সহায়তা
পরবর্তী নিবন্ধস্বাদে ও মানে ইফতারে সবার পছন্দ হোটেল বেস্ট ওয়েস্টার্ন