সাত মাসের ব্যবধানে আবারো মাটি ফেলে বাঁধ দেওয়া হয়েছে চকরিয়া সুন্দরবনের সামুদ্রিক জোয়ার-ভাটার প্রবহমান শাখা গোঁয়ারফাঁড়ি খালে। কয়েকদিন ধরে কাজ শুরুর পর শ্রমিকেরা গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে সেই খালে বাঁধ দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করে। এদিকে ওই ছড়াখালের চতুর্দিক ঘিরে জেগে উঠা অন্তত ১৫ একর চরে দাঁড়িয়ে থাকা হাজারো প্যারাবন (কেওড়া, বাইন, গেওয়া গাছ সমৃদ্ধ) উপড়ে ফেলা হচ্ছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী বৈধ ঘের মালিকরা অভিযোগ করেন।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, চকরিয়ার পশ্চিম বড় ভেওলার ডেবডেবী, ফুলতলা এবং বদরখালী ইউনিয়নের সাতডালিয়া পাড়ার ওপর দিয়ে প্রবহমান এই গোঁয়ারফাঁড়ি শাখা খাল। সমুদ্র উপকূলের এই শাখা খালের লবণাক্ত পানি ব্যবহার করে প্রায় তিন হাজার একর জমিতে চিংড়ি উৎপাদন এবং শুষ্ক মৌসুমে লবণ চাষ করে আসছেন অসংখ্য ঘের মালিক। কিন্তু এই শাখা খালের দুইদিকে মাটির বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় বেকায়দায় পড়েছেন ব্যক্তি মালিকানাধীন এবং সরকারিভাবে লিজপ্রাপ্ত চিংড়ি ঘের মালিকরা।
বৈধ ঘের মালিকেরা জানান, সাড়ে তিন কিলোমিটারের শাখা খালটিতে পানি চলাচলে মাটির বাঁধে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় অকেজো হয়ে পড়বে সমুদ্র উপকূলের অন্তত পাঁচটি স্লুইস গেট বা জলকপাট। এতে লবণ পানির অভাবে তিন হাজার একরের বৈধ ঘেরে চিংড়ি উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।
মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা দৈনিক আজাদীকে বলেন, সমুদ্র উপকূলের বিলুপ্ত চকরিয়া সুন্দরবনে প্রায় দুই শতাধিক বড়-ছোট শাখা-প্রশাখা খাল রয়েছে। জোয়ার-ভাটা নিয়ন্ত্রিত এসব খাল দিয়ে নৌযানও চলাচল করে। প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে উৎপাদিত লবণও গোঁয়ারফাঁড়িসহ এসব খাল দিয়ে পরিবহন হয়। এই অবস্থায় খালটিতে মাটির বাঁধ তৈরি করায় সবকিছুতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে।
পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. আবুল মনসুর বলেন, ইউএনওর নির্দেশনা পেয়ে ইতোপূর্বে গোঁয়ারফাঁড়ি খালের দুইদিকের মাটির বাঁধ অপসারণ করে পানির প্রবাহ সচল করা হয়। এখন শুনছি সেই খালে আবারো মাটির বাঁধ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, একবার অপসারণের পর ফের মাটির বাঁধ কারা দিয়েছে তা খুঁজে বের করা হবে। এবার আর কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।