গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে রহস্য, স্বামী পলাতক

চন্দনাইশ থানায় হত্যা মামলা

চন্দনাইশ প্রতিনিধি | সোমবার , ৪ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:০৮ পূর্বাহ্ণ

চন্দনাইশে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার রাত ৯টার দিকে পুলিশ ওই গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। পারিবারিক কলহের জের ধরে জোসনা আক্তার (২৩) নামে ওই গৃহবধূ ইঁদুর মারার ঔষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে শ্বশুর বাড়ির পক্ষ থেকে বলা হলেও তাকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি তার পরিবারের। গত শনিবার দুপুরে উপজেলার কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের কাঞ্চননগর গ্রামের ঘাট পাঠান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মামলার পর থেকে স্বামী শাকিল পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. ইসমাইল বাদি হয়ে বোনের স্বামী শাকিলকে আসামি করে চন্দনাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

জানা যায়, /৯ বছর আগে চন্দনাইশের কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৃত আলী হোসেনের মেয়ে জোসনা আকতারের সাথে একই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের আনু মিয়ার ছেলে মো. শাকিলের (৩০) সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। পরবর্তীতে পরকিয়ার সন্দেহে স্বামীস্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ শুরু হয় এবং বিভিন্ন সময় ঝগড়া হতো এবং মারধরের ঘটনা ঘটতো। গত কয়েকদিন আগেও শাকিল জোসনা আক্তারকে ব্যাপক মারধর করে। ১ আগস্ট দুপুরেও পারিবারিক কলহের জের ধরে জোসনা আক্তাকে তার স্বামী শাকিল ব্যাপক মারধর করে।

নিহত জোসনার ভাই মো. ইসমাইল জানান, গত ২ আগস্ট দুপুর ২টার দিকে ঘটনা ঘটলেও বিকেল ৫টার পরও তাদেরকে জানানো হয়নি। বিকেল ৫টার পর ঘটনার ব্যাপারে তারা জানতে পারলে শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে প্রথমে পটিয়া হাসপাতাল ও পরে চমেক হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। তিনি বলেন, বিয়ের পর থেকেই শাকিল আমার বোনকে শারীরিকভাবে মারধর করতো। ঘটনারদিনও তাকে মেরে জোরপূর্বক ইঁদুর মারার ওষুধ খাইয়ে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাদের সংসারে ৮ বছরের একটি পুত্র সন্তান ও ৪ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

এদিকে জোসনার শ্বশুর বাড়ির পক্ষের দাবি গত শুক্রবার জোসনা আক্তার ও মোহাম্মদ শাকিল পারিবারিক কলহের জের ধরে ঝগড়া করে। পরবর্তীতে তা মিমাংসা হয়ে একইদিন রাতে তারা একসাথে একই এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যায়। পরদিন শনিবার দুপুর বেলায় জোসনা আক্তারের মা বুলু আকতার মেয়ের বাড়িতে আসে এবং পূর্বের ঘটনায় মেয়ে জোসনাকে গালমন্দ করে। তার মা চলে যাওয়ার পর জোসনা অপমানে সবার অজান্তে ঘরে থাকা ইঁদুর মারার ওষুধ খায়। কিছুক্ষণ পর সে হঠাৎ বমি করলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম সরওয়ার জানান, গৃহবধূর লাশ ঘরে পড়ে থাকার সংবাদ পেয়ে গত শনিবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে লাশ থানায় নিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়। এ ব্যাপারে জোসনার ভাই মো. ইসমাইল বাদী হয়ে চন্দনাইশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শরীফ জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে ভিকটিমের শ্বশুর বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক ব্যক্তিকে লাখ টাকা জরিমানা, স্থাপনা উচ্ছেদ
পরবর্তী নিবন্ধকাপ্তাই হ্রদের ১৬টি জলকপাট খুলতে পারে আজ বিকালে