গুলিয়েলমো মার্চেজ মার্কনি (১৮৭৪–১৯৩৯। একজন ইতালীয় উদ্ভাবক এবং প্রকৌশলী যিনি বেতার যন্ত্রের সমম্প্রচার পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি একটি ব্যবহারিক রেডিওগ্রাফ পদ্ধতি তৈরি করেছিলেন। গুলিয়েলমো মার্কনি ১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে এপ্রিল ইতালির বোলোনে জন্মগ্রহণ করেন। পৃথিবীকে জ্ঞান বিজ্ঞানে যাঁরা অগ্রসর করে গেছেন তাঁদের অন্যতম বেতার আবিষ্কারক গুলিয়েলমো মার্চেজ মার্কনি। বেতারের জনক মার্কনি নামেই যিনি সমাধিক পরিচিত। রেডিও আবিষ্কার করে পৃথিবীকে বদলে দিয়েছেন তিনি। গুলিয়েলমো মার্চেজ মার্কনি বিশ বছর বয়সে মার্কিন বিজ্ঞানী হার্জের একটা প্রবন্ধ থেকে জানতে পারেন যে, সদ্যপ্রয়াত এক বৈজ্ঞানিক এমন একটা বৈদ্যুতিক যন্ত্র বের করতে পেরেছেন, যার সাহায্যে ঘরের একদিক থেকে প্রেরিত বৈদ্যুতিক তরঙ্গ বিনা তারে ঘরের অন্যদিকে আগুনের ফুলকি জ্বালিয়ে দেয়। মার্কনি হার্জের মতো বৈদ্যুতিক যন্ত্র তৈরির চিন্তায় বিভোর হয়ে থাকলেন। মার্কনির কাজ শুরু হলো লন্ডন জেনারেল পোস্ট অফিসের একটি কক্ষ থেকে পাশের বাড়ির কাছে বার্তা প্রেরণের মধ্য দিয়ে। একনিষ্ঠ অধ্যবসায় ও গবেষণায় তিনি এমন একটা যন্ত্র তৈরী করলেন, যার মাধ্যমে এক মাইল দূর পর্যন্ত বিনা তারে সংকেত পাঠানো সম্ভব। কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল আটলান্টিকের এপার থেকে ৩৩৭৮ কিলোমিটার দূরে ওপারে বার্তা প্রেরণ। ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে মার্কনি আটলান্টিকের এপার থেকে ওপারে বেতার সঙ্কেত পাঠানোর মাধ্যমে তিনি তাঁর স্বপ্ন পূরণ করেন। তার এ সাফল্য ছিল মানবজাতির জন্য যুগান্তকারী। ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে গুলিয়েলমো মার্কনি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে তার বিহীন সংযোগ (বেতার) স্থাপন করেন। বেতার হল তার ব্যতীত যোগাযোগের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। রেডিও (বেতার), টেলিভিশন (দূরদর্শন), মোবাইল ফোন ইত্যাদিসহ তারবিহীন যেকোনো যোগাযোগের মূলনীতিই হল বেতার। ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে সরকার কর্তৃক তিনি সম্মানিত হন এবং ইতালি সরকার তাকে আজীবন সিনেট সদস্য নির্বাচিত করে। ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ৩৫ বছর কার্ল ফের্ডিনান্ড ব্রাউনের সাথে যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। বেতার সম্প্রচার পদ্ধতির ভিত্তি স্থাপনের জন্যই তাদেরকে এই পুরস্কার দেয়া হয়। গুলিয়েলমো মার্চেজ মার্কনি ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের ২০শে জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।