গালি দেয়ায় মাথায় আঘাত ও বালিশ চাপায় হত্যা

সাতকানিয়ায় চেয়ারম্যান হত্যার রহস্য উন্মোচন

সাতকানিয়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ৪ মার্চ, ২০২১ at ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ

সাতকানিয়ায় প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ও কেঁওচিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হক মিঞা হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। মূলত বেতন বৃদ্ধির কথা বলার সময় গালি দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়ির কর্মচারী জমির উদ্দিন তাকে হত্যা করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করার পর বাড়ির কর্মচারী ও বাঁশখালীর জলদি খলিশ্বা পাড়ার হাবিবুর রহমানের ছেলে জমির উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গ্রেপ্তারকৃত আসামির দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ১টি কোরাবারি, ১টি ছুরি, আসামির ব্যবহৃত ২টি ও নিহত আবদুল হক মিঞার ১টি মোবাইল সেট পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। গতকাল বুধবার সাতকানিয়া থানায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকারিয়া রহমান জিকু। এসময় থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন, হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেখ মো. সাইফুল আলম উপস্থিত ছিলেন। এতে এএসপি জানান, গত রোববার রাত ১১ টা ৪৫ মিনিট থেকে পরেরদিন সকাল সাড়ে ৮ টার মধ্যে যেকোন সময় কেঁওচিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হক মিঞাকে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিন সকাল থেকে কেরানীহাটের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কর্মচারী জমিরকে পুলিশ নজরদারিতে রাখে। এরপর জমিরকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে জমির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হক মিঞাকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে।
তিনি আরো জানান, ঘটনার দিন রাতে কর্মচারী জমির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হক মিঞাকে তার বেতন বৃদ্ধি করতে বলে। তখন আবদুল হক মিঞা তাকে গালি দিয়ে কথা বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কর্মচারী জমির তার কক্ষে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এরপর ভোর রাতে জমির চেয়ারম্যান আবদুল হক মিঞার শয়ন কক্ষে গিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় কোরাবারি দিয়ে মাথায় আঘাত করার পর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। এঘটনাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করতে জমির ছুরি দিয়ে নিজের পা সামান্য কেটে দেয়। আবদুল হক মিঞার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর ঘাতক জমির হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কোরাবারিটি নির্দিষ্টস্থানে রেখে দেয়। তার ব্যবহৃত ২টি ও নিহত আবদুল হক মিঞার ব্যবহৃত ১টি মোবাইল সেট চেয়ারম্যান বাড়ির পেছনের পুকুরে ফেলে দেয়।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল বশিরুল ইসলাম ও এলাকার লোকজনের উপস্থিতিতে পুলিশ জমিরকে নিয়ে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত কোরাবারি, ছুরি, মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত জমিরসহ ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। হত্যাকাণ্ডে জমির ছাড়া অন্যদের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদেরকে আপাতত বাদির জিম্মায় দেয়ায় হয়।
এদিকে সাতকানিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন জানান, আসামি জমিরকে আদালতে হাজির করা হলে সে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে নিজ বসতঘরের শয়ন কক্ষ থেকে সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হক মিঞার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় আবদুল হক মিঞার বড় ছেলে নিজাম উদ্দিন বাদি হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১৭৭ সড়কের তালিকা প্রস্তুত
পরবর্তী নিবন্ধশিল্পখাতে বাংলাদেশ বেশ ভালো অবস্থানে আছে