গাড়ির বয়সসীমা নির্ধারণ, আসছে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম

বাস-মিনিবাস ২০ বছর, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ২৫ বছর এর বেশি পুরনো গাড়ি চলতে পারবে না

হাসান আকবর | বুধবার , ২ জুলাই, ২০২৫ at ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

দেশে বাসমিনিবাস এবং ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানসহ যানবাহন ও পণ্যবাহী গাড়ির বয়সসীমা বা ইকোনমিক লাইফ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বিশ বছরের বেশি পুরনো বাস ও মিনিবাস এবং ২৫ বছরের বেশি পুরনো ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সড়কে উপরোক্ত বয়সসীমার বেশি পুরনো গাড়ি যাতে চলতে না পারে তা নিশ্চিত করতে বিআরটিএ শীঘ্রই ক্র্যাশ প্রোগ্রাম নিয়ে মাঠে নামছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সড়কমহাসড়কে শৃঙ্খলা আনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা ঠেকাতে সরকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নতির পাশাপাশি গাড়ির ব্যাপারেও কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে। ফিটনেসবিহীন লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি যাতে সড়কে চলাচল করতে না পারে সেজন্য গাড়িগুলোর বয়সসীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। দেশের প্রচলিত সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ধারা ৩৬এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার বাসমিনিবাসের ক্ষেত্রে ২০ বছর এবং ট্রাক কাভার্ডভ্যান প্রভৃতি মালবাহী মোটরযানের ক্ষেত্রে ২৫ বছর ইকোনমিক লাইফ বা বয়সসীমা নির্ধারণ করেছে। অর্থাৎ ২০০০ সালের আগের কোনো মডেলের ট্রাক কাভার্ডভ্যানসহ পণ্যবাহী গাড়ি এবং ২০০৫ সালের আগের কোনো মডেলের বাসমিনিবাস শহর কিংবা মফস্বলে চলাচল করতে পারবে না। গতকাল ১ জুলাই থেকে সরকার এই সিদ্ধান্ত কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে। অর্থাৎ গতকাল থেকে সড়কে বয়সসীমা উত্তীর্ণ হওয়া কোনো বাসমিনিবাস, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান আইনত চলাচল করতে পারবে না।

সরকারের পক্ষ থেকে বয়সসীমা উত্তীর্ণ বাস, মিনিবাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান প্রভৃতি যান ও পণ্যবাহী মোটরযানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু বিআরটিএ নয়, জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগকেও একই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে সারা দেশে একযোগে দিনে ও রাতে মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

বিআরটিএর দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজাদীকে জানান, সরকারের পক্ষ থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করা হবে। আইনে যে বয়সসীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে তার থেকে বেশি পুরনো কোনো বাসমিনিবাস, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানসহ পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আমরা একটি ক্র্যাশ প্রোগ্রাম হাতে নিয়ে মাঠে নামব। রাতেদিনে ওই অভিযান চলবে। অভিযানকালে যেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি পাওয়া যাবে সেগুলোকে আটক করে ডাম্পিং ইয়ার্ডে নেওয়া হবে। আইন অনুযায়ী এসব গাড়ির চালক এবং মালিককে জরিমানা কিংবা কারাদণ্ড প্রদানেরও নির্দেশনা রয়েছে।

তিনি বলেন, সরকার সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে। মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়িগুলো শুধু শৃঙ্খলাই নষ্ট করে না, সড়ক দুর্ঘটনাও ঘটায়। তাই যে কোনো পরিস্থিতিতে এসব গাড়িকে আর রাস্তায় চলতে দেওয়া হবে না। ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চলাকালে মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়িগুলোকে খুঁজে খুঁজে ধরা হবে।

বিআরটিএ সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২ হাজার ৪১০ বাস এবং ২ হাজার ৫৬৩টি মিনিবাস রয়েছে। এর বাইরে বন্দর নগরীতে বিশ হাজারের মতো ট্রাক রয়েছে। এসব বাসট্রাকের অনেকগুলোর মেয়াদ বহু আগেই ফুরিয়ে গেছে। অন্তত ৫০ বছরের পুরনো অনেক ট্রাক নগর দাবড়ে বেড়ায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব গাড়ির কোনো তালিকাও বিআরটিএতে নেই। এগুলোর ফিটনেস, ট্যাঙটোকেন কিছুরই বালাই নেই। পুলিশকে ম্যানেজ করে এসব গাড়ি চলাচল করে বলে অভিযোগ রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচিন্ময়সহ ৩৮ জনকে আসামি করে চার্জশিট
পরবর্তী নিবন্ধহাছান মাহমুদ নওফেল জাবেদসহ ১২৬ জনের বিরুদ্ধে দুই মামলা