গাজায় ডব্লিউএইচও’র কর্মীদের বাসস্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা

| বুধবার , ২৩ জুলাই, ২০২৫ at ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ

ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার মধ্যাঞ্চলীয় দেইর আল বালাহ শহরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কর্মীদের বাসস্থান ও প্রধান গুদামে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়েছে, জানিয়েছে সংস্থাটি। খবর বিডিনিউজের।

জাতিসংঘের সংস্থাটি জানায়, সোমবারের এই ঘটনায় সংস্থার কর্মীদের জীবন হুমকির মুখে পড়ার পাশাপাশি গাজায় তাদের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এদিন ডব্লিউএইচওর কর্মীদের বাসভবনে টানা তিন দফা হামলা চালানো হয়। বিমান হামলায় বাসস্থান ও গুদামে আগুন ধরে যায় এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে সংস্থাটির কর্মী, তাদের শিশুসহ পরিবার বিপদগ্রস্ত হয় বলে সংস্থাটির বরাতে জানিয়েছে রয়টার্স।

ডব্লিউএইচও বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী ওই প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। নারীদের এবং শিশুদের সংঘাতময় পরিবেশের মধ্য দিয়ে হেঁটে আলমাওয়াসির দিকে যেতে বাধ্য করে। পুরুষ কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের হাতকড়া পরানো হয়, তাদের নগ্ন করে, বন্দুকের মুখে জিজ্ঞাসাবাদ ও তাৎক্ষণিক পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়। সংস্থাটির নিজেদের এঙ পোস্টে জানায়, এসময় ডব্লিউএইচওর দুই কর্মী ও তাদের পরিবারের দুই সদস্যকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে তিনজনকে পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও একজন কর্মী এখনও আটক করে রেখেছে তারা।

ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস বলেন, ডব্লিউএইচও আটক কর্মীর তাৎক্ষণিক মুক্তি এবং তাদের সব কর্মীর সুরক্ষার দাবি জানাচ্ছে। ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, রোববার দেইর আল বালাহে তাদের প্রধান গুদামেও হামলা হয়। এসময় সেখানে একটি বিস্ফোরণ ঘটে এবং ভেতরে আগুন ধরে যায়। গুদামটি ছিল একটি এভাকুয়েশন জোনে। এসব হামলা সত্ত্বেও তারা দেইর আল বালাহে তাদের কার্যক্রম বিস্তারের পরিকল্পনা করছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে। সোমবার ইসরায়েলি বাহিনী প্রথমবারের মতো দেইর আল বালাহ শহরের দক্ষিণ ও পূর্বাংশে ট্যাংক নিয়ে ঢুকে পড়ে।

সেখানে হামাস যোদ্ধারা সম্ভবত জিম্মিদের বন্দি করে রেখেছে বলে ধারণা ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের। ওই দুটি এলাকায় ট্যাংক থেকে ছোড়া গোলা কয়েকটি বাড়ি ও মসজিদে আঘাত হানে, এতে অন্তত তিন ফিলিস্তিনি নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন।

২১ মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে গাজার প্রায় পুরো জনসংখ্যা বাস্তুচ্যুত হয়েছে। দেইর আল বালাহ শহরেও আশ্রয় নিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। নতুন করে ওই এলাকায় অভিযান শুরুর পর অনেকেই পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকে পালিয়ে গেছে।

এই পরিস্থিতিতে সোমবার যুক্তরাজ্যসহ ২০টিরও বেশি দেশ গাজায় যুদ্ধ অবসানের দাবি জানায় এবং ইসরায়েলের মানবিক ত্রাণ সরবরাহ ব্যবস্থার সমালোচনা করে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসনেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা ইসরায়েলে ঢুকে পড়ে ১২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় বলে ইসরায়েলি তথ্যে বলা হয়েছে।

এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় যে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে, তাতে ৫৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে সেখানে ঘরবাড়িহীন মানুষের সংখ্যা বেড়েছে, তীব্র মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, গাজায় স্বাস্থ্যখাত কার্যত ধসে পড়েছে। জ্বালানি ও ওষুধের ঘাটতির পাশাপাশি বারবার গণহত্যার ঘটনায় হাসপাতালগুলো বিপর্যস্ত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৫ সপ্তাহ পর কেরালা বিমানবন্দর ছাড়ল ব্রিটিশ এফ-৩৫বি যুদ্ধবিমান
পরবর্তী নিবন্ধফের ইউনেস্কো থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিলেন ট্রাম্প