গাজায় যুদ্ধের শুরুর দিনগুলোতে ইসরায়েল এবং হামাস উভয়ই যুদ্ধাপরাধ করেছে। জাতিসংঘের এক তদন্তে এমনটি দেখা গেছে। বলা হয়েছে, বেসামরিক মানুষের বিপুল প্রাণহানির কারণে ইসরায়েলের তৎপরতাও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সামিল। জাতিসংঘ ইনকোয়ারি কমিশন (সিওআই) দুটো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। খবর বিডিনিউজের।
একটি গতবছর ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে ঢুকে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলা নিয়ে এবং আরেকটি এর জবাবে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক হামলা নিয়ে। ইসরায়েল তদন্ত কমিটিকে সহযোগিতা করেনি। কমিশন ইসরায়েল–বিরোধী পক্ষপাতদুষ্ট বলে ইসরায়েল অভিযোগ করেছে। সিওআই বলছে, ইসরায়েল তাদের কাজে বাধা দিয়েছে। ইসরায়েল এবং অধিকৃত ফিলিস্তিন অঞ্চলগুলোতে তারা জাতিসংঘ তদন্তকারীদের ঢুকতে দেয়নি। জেনিভায় জাতিসংঘের কূটনৈতিক মিশন সিওআই এর প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। ওদিকে, হামাস প্রতিবেদনের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য করেনি। ইসরায়েলের ভাষ্যমতে, গতবছর ৭ অক্টোবরের হামলায় ১২০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল এবং হামাস যোদ্ধারা ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল।
আর হামাসের হামলার পরই গাজায় ইসরায়েলের শুরু করা সামরিক অভিযানে ফিলিস্তিনের ভাষ্যমতে, এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উভয়পক্ষই নির্যাতন, ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা, অমানবিক এবং নিষ্ঠুর আচরণ করে যুদ্ধাপরাধ করেছে।
তাছাড়া, গাজায় মানুষজনকে অনাহারে রেখে ইসরায়েল আরেকটি যুদ্ধাপরাধ করেছে। তারা কেবল গাজাবাসীদের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার, পানি, আশ্রয়, চিকিৎসা দিতেই ব্যর্থ হয়নি বরং এইসব প্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহও আটকে দিয়েছে। হত্যার মতো ইসরায়েলের কিছু যুদ্ধাপরাধ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধেরও সামিল হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সিওআই।
এতে বলা হয়েছে, গাজায় বিপুল সংখ্যক মানুষ হতাহতের ঘটনাসহ বেসামরিক অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়েছে। ইসরায়েল গাজায় সর্বোচ্চ ক্ষয়ক্ষতি করার অভিপ্রায় নিয়ে সেখানে হামলা চালিয়েছে।
এক্ষেত্রে, সুনির্দিষ্ট নিশানায় হামলা, পর্যাপ্ত পূর্ব সতর্কতা এবং আনুপাতিকতার দিকটি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। যুদ্ধের শিকার ব্যক্তি, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার, স্যাটেলাইট ছবি, মেডিকেল রিপোর্ট এবং যাচাই করা অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে সিওআই প্রতিদেন তৈরি করেছে।