ফিলিস্তিনের ছিটমহল গাজার বিভিন্ন অংশে মঙ্গলবার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, জানিয়েছেন ভূখণ্ডটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তবে তৃতীয় দিনের মতো হামাসের যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর লড়াইয়ে কিছুক্ষণ বিরতি দেওয়া হলে গাজার শিশুদের পোলিও টিকা দেওয়ার সুযোগ পান চিকিৎসা কর্মীরা।
ফিলিস্তিনের দমকল বাহিনী জানিয়েছে, এদিন যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে রাফার চার নারী রয়েছেন। গাজা সিটির একটি হাসপাতালের কাছে নিহত হয়েছেন আরও আটজন। খবর বিডিনিউজের।
চিকিৎসা কর্মীরা জানান, একইদিন পরে গাজা সিটির ওমর আল–মোখতার সড়কের একটি বাড়িতে ইসরায়েলের বিমান হামলায় নয় ফিলিস্তিনি নিহত হন। শহরটির উত্তরাংশের শেখ রাদওয়ান এলাকার একটি কলেজের কাছেও বিমান হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, সাবেক নামা কলেজের এক অংশে হামাসের একটি কমান্ড সেন্টার লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয়, সেখান থেকে হামাসের যোদ্ধারা তৎপরতা চালাচ্ছিল। অন্য সবাই গাজার বিভিন্ন অংশে পৃথক বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন বলে চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা গাজা সিটির আল–আহলি আরব হাসপাতালের কাছে একটি কমান্ড সেন্টারে হামাসের এক জ্যেষ্ঠ কমান্ডারসহ আট ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীকে হত্যা করেছে। হামাসের নিহত এই কমান্ডার ৭ অক্টোরর ইসরায়েলের চালানো হামলায় অংশ নিয়েছিল বলে দাবি করেছে তারা। এক বিবৃতিতে বাহিনীটি বলেছে, গাজা সীমান্তে নিকটবর্তী ইসরায়েলের নেতিভ হাআসারা আবাসিক এলাকায় ‘হামাসের সন্ত্রাসীরা বেসামরিকদের নির্বিচার হত্যা করেছিল’ আর তার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা আহমেদ ফোজি নাজের মুহম্মদ ওয়াদিয়া। রয়টার্স বলছে, ইসরায়েলি বাহিনীর এই বিবৃতি নিয়ে হামাস কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। হামাস ও ইসলামিক জিহাদের সশস্ত্র শাখাগুলো জানিয়েছে, তারা গাজা সিটির জেইতুন এলাকায় এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফা ও খান ইউনিসে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, গাজায় পোলিও টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে মঙ্গলবার লক্ষ্যের চেয়েও এগিয়ে ছিল তারা। এ গণকমর্সূচীর তৃতীয় দিনে ১০ বছরের কম বয়সী এক চতুর্থাংশ শিশুকে টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। গত মাসে গাজায় এক শিশুর দেহে পোলিওর উপস্থিতি ধরা পড়ার পর তড়িঘড়ি করে এ টিকাদান কর্মসূচির পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এই টিকাদান কর্মসূচী সফল করতে ইসরায়েলি বাহিনী ও হামাস যোদ্ধারা প্রতিদিন আট ঘণ্টা করে লড়াইয়ে বিরতি দিতে সম্মত হয়েছে।