১৯১৮ সালে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী লর্ড বেলফুর প্যালেষ্টাইনের আরব অধ্যুষিত অঞ্চলে ইহুদীদের জন্য একটি রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত প্রথম ঘোষণা করেন। এটাই কুখ্যাত “বেলফুর ঘোষণা” নামে পরিচিত। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী পুঁজিবাদী দুনিয়ার তীব্র অন্তর্দ্বন্দ্বে ফ্যাসিবাদের উত্থান, ১৯২৯ থেকে ১৯৩৩ পর্যন্ত পাঁচ বছর ব্যাপী পুজিঁবাদী বিশ্ব অর্থনীতির নজিরবিহীন সংকট ও মন্দা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে বিধ্বস্ত পুঁজিবাদী বিশ্ব তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে তাদের স্বার্থের পাহারাদার হিসাবে ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। ১৯৪৮ সালে এসে প্যালেষ্টাইনের আরব অধিবাসীদের জোরপূর্বক নৃশংসভাবে সরিয়ে ১৯১৮ সালের বেলফুর ঘোষণার আদলে ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইল প্রতিষ্ঠা করা হয়। সৌদি আরব, মিশর ইরাক সহ আরব দুনিয়ার কোন মুসলিম রাষ্ট্র ফিলিস্তিনিদের সাহায্যে তখন এগিয়ে আসেনি কেননা এই তিন বৃহৎ আরব রাষ্ট্র সহ আরব দুনিয়ার সর্বত্র তখন চলছিল অনৈসলামিক বাদশাহী শাসন। এখনো সে পরিস্থিতির মৌলিক পরিবর্তন হয়নি। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে দ্রুতই বরফ গলতে শুরু করে। সবচেয়ে শক্তিশালী ইসরাইলি প্রতিবেশী মিসরে ১৯৫২ সালে বাদশাহী শাসনকে উৎখাত করে সেনাবাহিনীর শীর্ষ নেতা কর্ণেল জামাল আবদুল নাসের মিসরের প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হন। তিনি ছিলেন রাজতন্ত্র বিরোধী ও প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী। তখন থেকে মিসর বৈরীভাবাপন্ন রাষ্ট্র হিসাবে ইসরাইলের বিরোধিতা শুরু করেন। নাসের সুয়েজ খাল জাতীয়করণ সহ সোভিয়েত সহায়তার মিসরকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর ও সমৃদ্ধ করতে নানা পদক্ষেপ নেন। নেহেরু ও সুকর্ন এর সাথে মিলে গড়ে তোলেন জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন–যা মূলত মার্কিন যুদ্ধ জোট সেন্টো, সিয়াটো ও ন্যাটো বিরোধী এক পদক্ষেপ। মিসরের আরব জাতীয়তাবাদী এই প্রগতিশীল পরিবর্তন পুরো এলাকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বাদশাহী শাসকদের ও মার্কিন আশ্রিত ইসরাইলকে আতংকিত করে তুলে। তখন থেকেই সৌদি, কাতার, কুয়েত, আমিরাত, ইরাক প্রভৃতি দেশের বাদশাহী শাসকদের সাথে ইসরাইলের এক অদৃশ্য মৈত্রী বন্ধন তৈরি হয় মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতায়।
জর্দান নদীর পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যাকায় আশ্রিত লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন আবাসভূমি প্যালেষ্টাইনের স্বাধীনতার লড়াই জোরদার হতে শুরু করে ১৯৬০ দশকের প্রথম দিকে। প্যালেষ্টাইনের অকুতোভয় সংগ্রামী নেতা ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় প্যালেষ্টাইন লিবারেশন অর্গনাইজেশন বা পিএলও। সব আরব ফিলিস্তিনিদের প্রাণের নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হন ইয়াসির আরাফাত। জায়নবাদী রাষ্ট্র ইসরাইলি সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে তিনি গড়ে তোলেন গণসংগ্রাম ও সশস্ত্র প্রতিরোধ। প্যালেষ্টাইনি এই প্রতিরোধ যুদ্ধ সারা পৃথিবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং সেকুলার ও উদার গণতন্ত্রী নেতা হিসাবে ইয়াসির আরাফাত বিশ্বনেতার স্বীকৃতি লাভ করেন। পিএলও’র নেতৃত্বে ফিলিস্তিনিদের এই আন্দোলন ছিল একটি সেকুলার গণতান্ত্রিক স্বাধীন প্যালেষ্টাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। ইয়াসির আরাফাতও ছিলেন ব্যক্তিগত জীবনে রাজতন্ত্র ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী, গনতান্ত্রিক মূল্যবোধ সম্পন্ন। ফলে তিনি ইসরাইলের প্রগতিশীল খৃষ্টান ও ইহুদীদের সর্বাত্মক সমর্থন লাভ করেন। তাঁর সাথে বাংলাদেশের প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতৃত্বের ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল এবং মুক্তিযুদ্ধ ও এ দেশের সামরিক শাসন বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাঁর অকুন্ঠ সমর্থন ছিল। তাঁর নেতৃত্বে শুধু প্যালেস্টাইনিদের গণপ্রতিরোধ নয় পশ্চিমতীর ও গাজার ফিলিস্তিনি অধিবাসীদের সরাসরি ভোটে গড়ে উঠে প্রবাসী স্বাধীন প্যালেস্টাইনি সরকার ও প্রশাসন। ইয়াসির আরাফাত প্যালেষ্টাইনের প্রবাসী সরকারের নির্বাচিত প্রধান হিসাবে সারাবিশ্বের স্বাীকৃতি অর্জন করেন তীব্র মার্কিনী ও ইসরাইলি বিরোধিতার মুখে। যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার জন্য জাতিসংঘে প্রবেশাধিকার না পেলেও তিনি ফিলিস্তিনি জনগণের অবিসংবাদিত নেতা হিসাবে পরিগণিত হন। আমাদের দেশের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনিদের মুক্তি সংগ্রাম নিয়ে তখন পুরো সময় নীরবতা পালন করেছে মধ্যপ্রাচ্যের বাদশাহী শাসকদের অন্ধ অনুকরণে। বস্তুত এরা আদর্শগতভাবে ইয়াসির আরাফাতের বিরোধী ছিলেন। ১৯৬৭ ও ’৭৩ সালে আরব ইসরাইল যুদ্ধে এসব বাদশাহী দেশগুলো পরোক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্রা ও ইসরাইলের পক্ষেই ছিল।
ইতোমধ্যে মিসরের প্রেসিডেন্ট আরব দুনিয়ার অসম সাহসী নেতা জামাল আবদুল নাসেরের মৃত্যুর পর পরবর্তী মিসরীয় প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত মার্কিন ঘেঁষা নীতি নিয়ে চলতে শুরু করেন ফলে আরব জাতীয়তাবাদের যে উত্থান ’৬০ এর দশকে মধ্যপ্রাচ্যকে আলোড়িত করেছিল ’৮০’র দশকে এসে তা স্তিমিত হয়ে পড়ে। ১৯৭৯ সালে আরব স্বার্থ উপেক্ষা করে মার্কিন মধ্যস্ততায় ও সৌদি সম্মতিতে ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় মিসর ও ইসরাইলের মধ্যে। তখন থেকে প্যালেস্টাইনিদের মুক্তিসংগ্রাম মিশরীয় সাহায্য থেকেও বঞ্চিত হতে থাকে। এরি সুযোগে ইসরাইল অধিকৃত আরব অঞ্চলে ইহুদী বসতি স্থাপন শুরু করে। এভাবে মার্কিন কূটনৈতিক সহায়তায় পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ বস্তুত ইসরাইলের হাতে চলে যায়। ইয়াসির আরাফাত মৃত্যুবরণ করলে তাঁর স্থলে মাহমুদ আব্বাস পিএল ও নেতা হলেও তাঁর দূর্বল নেতৃত্বে পিএলও এগুতে পারেনা। ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনিদের আন্দোলনে ভাঙন ধরাতে ইসরাইল ও মার্কিন মদদে গঠিত হয় “হামাস” নামে এক সশস্ত্র জঙ্গী দল। এরা শুরুতে পিএলও’র সাথেই ভ্রাতৃঘাতী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে বহু পিএলও যোদ্ধা নিহত হয়। বিশ্ব স্বীকৃত সংগঠন পিএলও নিজেদের সামর্থ্যের তুলনায় মার্কিন ও ইসরাইলী সামরিক সক্ষমতা ও বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে কোন হঠকারি পথে না গিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতা সংগ্রামকে রাজনৈতিক, সামরিক ও কূটনৈতিক ভাবে এমন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল যা ইসরাইলের জন্য ছিল অস্বস্তিকর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যের স্বার্থকে নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছিল। সাধারণ ইহুদিদের প্রতি যেমন তাতে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছিল না তেমনি আরব জনগণও সর্বাত্মকভাবে তাঁকে সমর্থন দেয়। এর ফলে ইসরাইল ভেতরে বাইরে নানা চাপের মধ্যে ছিল।
ফিলিস্তিনি আন্দোলন ও জনগণের প্রতিবাদকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার অজুহাত খুঁজছিল যুক্তরাষ্ট্রা ও ইসরাইল। সাধারণ ইসরাইলিরা সব সময় নেতানিয়াহুর নৃশংসতার বিরুদ্ধে ছিল যা সাম্প্রতিক সময়ে ও দেখা গেছে। ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর হামাস হঠাৎ ইসরাইল আক্রমণ করে। হাজার খানেক ইহুদি হত্যা ও কিছু লোককে পণবন্দী করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা নেতানিয়াহুকে যেন সুযোগ করে দিল গাজাকে ধ্বংস ও ফিলিস্তিনি মুক্ত করা। নয়তো সবসময় অত্যন্ত কড়া মার্কিন–ইসরাইল যৌথ নজরদারি ও গাজা সীমান্তে স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণ ও সদা প্রস্তুত ইসরাইলি সৈন্যদের সেন্সর এলাকা পার হয়ে কিভাবে কিছু সশস্ত্র হামাস যোদ্ধার ইসরাইলে অনুপ্রবেশ সম্ভব হল? এই হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে ইসরাইলি জনমতকে বিভ্রান্ত করে ইসরাইল শুরু করে পাল্টা নৃশংস হামলা। ইতোমধ্যে হামাসের সব প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দিয়ে গাজাকে সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তুপে পরিণত করা হয়েছে, মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে যাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। লেবাননের ইরান অনুসারী হিজবুল্লাকে ইসরাইল ইতোমধ্যে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। যুদ্ধ বিরতি লংঘন করে পবিত্র রমজান ও ঈদে ট্রাম্পের সম্মতিতে নেতানিয়াহু হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। সারা বিশ্বের প্রতিবাদের মুখেও শুধু মার্কিন সমর্থন ও অস্ত্রে গাজা আজ ফিলিস্তিনিদের জন্য নরকে পরিনত হয়েছে। গাজার গণহত্যাকারী শুধু নেতানিয়াহু নয় সেই গণহত্যার মূল নায়ক বাইডেন ও ট্রাম্প। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এ দেশের বামপন্থীরা সব সময় সোচ্চার ছিল। দুই বৃহৎ দলও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর মিছিল থেকে “মার্কিন সাম্্রাজ্যবাদ নিপাত যাক” এই স্লোগান কখনো উঠেনি। সম্প্রতি আয়োজিত “মার্চ ফর গাজা” নামে সমাবেশ ও মিছিল থেকে গাজা হত্যাকান্ডের মূল কান্ডারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগী গাজার প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলোর শাসকদের বিরুদ্ধে কোন শ্লোগান আসেনি। তাদের বক্তৃতায় শুধু সব সময় “মুসলিম উম্মাহ’র ঐক্য ও কল্যাণের জন্য বিমূর্ত এক আহ্বান শোনা যায়। এ জন্য গাজা হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এবারের ধরনটাও যতনা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি ও একাত্মবোধ থেকে তার চাইতেও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক মেরুকরণ এর সুদূর প্রসারী লক্ষ্য থেকেই হয়েছে বলে মনে হয়। আলাদা কর্মসূচি পালন করার পরেও তিন ধর্ম ভিত্তিক সংগঠন আযোজিত এই সমাবেশে শেষ মূহুর্তে বিএনপির “প্রতীকী উপস্থিতি” থেকে অন্তত তাই মনে হয়।
ফিলিস্তিনিদের দীর্ঘ মুক্তির আন্দোলন বিশ্বব্যাপী চলমান যুদ্ধবাজ মার্কিনীদের বিরুদ্ধে, সাম্রাজ্যবাদের লুন্ঠনের বিরুদ্ধে এক গৌরবদীপ্ত জাতীয় মুক্তির লড়াই। তা শুধু মুসলিমদের উপর ইহুদীদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই নয় এটা মধ্যপ্রাচ্যের তেল সম্পদ লুট করার উদ্দেশ্যে মার্কিন ও তার আজ্ঞাবহ মধ্যপ্রাচ্যের ইসরাইলিদের প্রতিবেশী শতভাগ মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর প্রকাশ্য ও নীরব সমর্থনে ইসরাইলকে এই বর্বর হত্যাকাণ্ডে প্ররোচিত করার ঘটনা। ইসরাইলের বিরুদ্ধে সর্বজনীন ও বৈশ্বিক প্রতিরোধকে দুর্বল করার জন্য এতে ধর্মের রং চড়ানো হচ্ছে বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে। আমরা দেখেছি এক বছর আগে বৃটেনে এক খৃষ্টান ধর্মাবলম্বী সৈনিক এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আত্মহত্যা করতে, আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শতশত ভিন্নধর্মী শিক্ষার্থী এর প্রতিবাদে পথে নামতে, হামলা শুরুর পরপরই আমাদের প্রতিবেশী কলকাতায় বামফ্রন্টের ডাকে লাখো মানুষ মিছিল করতে। ভারতের বর্তমান ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক শাসক দল বিজেপি ইসরাইলের সমর্থক কিন্তু আমরা ইচ্ছা করেই ভুলে থাকি নেহেরু ও ইন্দিরার দীর্ঘ কংগ্রেস শাসনামলে ভারতের সাথে ইসরাইলের কূটনৈতিক সম্পর্কই ছিল না যখন মুসলিম উম্মার নামে নসিহতকারী অনেক মুসলিম প্রধান দেশ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইসরাইলকে সমর্থন করেছে। কাজেই প্রশ্নটি রাজনৈতিক অর্থনীতির, – ধর্মের নয়, সমাধানও হতে হবে প্রগতিশীল বিশ্ব জনমতের চাপে। এ নিয়ে কোন বিতর্কের অবকাশ নেই যে সোভিয়েত ইউনিয়ন টিকে থাকলে যুক্তরাষ্ট্র সাহস করত না ইরাক দখল করে সাদ্দামকে ফাঁসি দিতে, গাদ্দাফিকে রাজপথে বোমা মেরে হত্যা করতে, ইরানকে হুমকি দিতে, আর এভাবে নির্বিচারে গাজায় গনহত্যা চালাতে।
ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের পক্ষে, গাজার গনহত্যার বিরুদ্ধে যে কোন ব্যক্তি, দল ও মতের আন্দোলন অবশ্যই মার্কিন বিরোধী, মার্কিনি রাজনৈতিক অর্থনীতির বিরোধী, ধর্ম–বর্ণ নিবিশেষে প্রকৃত মানবতাবাদী, ধর্মীয় হিংসা ও ঘৃণা মুক্ত হতেই হবে। ঘৃনা প্রকাশ করতে হবে মার্কিন প্রশাসন ও তার সহযোগী ধর্মের লেবাসধারী ইসরাইলের প্রতিবিেশী বাদশাহী শাসকদের বিরুদ্ধে। অন্যথা সব প্রতিবাদ অর্থহীন, উদ্দেশ্যমূলক ও লোক দেখানো বলে বিবেচনা করার যথেষ্ট রাজনৈতিক ও সামাজিক যুক্তি রয়েছে। ’৭১ এ ও আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের এসব দেশ আমাদের দেশে সংঘটিত গণহত্যাকে সমর্থন করেছে, বিরোধিতা করেছে ফিলিস্তিনিদের মত আমাদের মুক্তি সংগ্রামের। দেশ কালের সীমানা ছাড়িয়ে দেখা যায় জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের সংগ্রামের শত্রু এক ও অভিন্ন। আমরা যেন গাজার মূল গণহত্যাকারী মার্কিনী ও তার সহযোগীদের আড়াল করার অপচেষ্টা সম্পর্কে সচেতন থাকি।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট।