গলে দাপুটে বাংলাদেশ, দ্বিতীয় দিন শেষে সংগ্রহ ৪৮৪/৯

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ১৯ জুন, ২০২৫ at ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ

গল টেস্টের শুরুটা ছিল বিবর্ণ। কিন্তু মুশফিক আর শান্তর কল্যাণে প্রথম দিনটা কেটেছিল স্বপ্নের মতো। দ্বিতীয় দিনও দারুণ কেটেছে। মাঝখানে বৃষ্টি আর শেষ বিকেলে বাংলাদেশের ব্যাটিং ধ্বস সত্ত্বেও রান পাহাড়ে পৌঁছে গেছে টাইগাররা। ম্যাচের দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ৪৮৪। আগের দিনের ২৯২ রানের সাথে গতকাল বুধবার আরো ১৯২ রান যোগ করেছে বাংলাদেশ। গতকাল মাঠে খেলা গড়িয়েছে মাত্র ৬১ ওভারের। দিনের শেষ সেশনে বৃষ্টির আক্রমণের পর শেষ বিকেলে ২৬ রানের মধ্যে ৫টি উইকেট খুইয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। না হয় গতকালই হয়তো ৫০০ রান হয়ে যেতো টাইগারদের। যদিও দারুণ ব্যাটিংয়ের পরও গল টেস্টে ৫০০ রান করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের।

ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে রানের পাহাড়ে চড়লেও তিনটি আক্ষেপ সঙ্গী হয়েছে বাংলাদেশের। যার প্রথমটি শান্তর দেড়শ রান করতে না পারা। দ্বিতীয়টি লিটন দাশের সেঞ্চুরি মিস। আর শেষটি মুশফিকুর রহিমের আরেকটি ডাবল সেঞ্চুরি করতে না পারা। তবে শান্ত, মুশফিক আর লিটনএই ত্রয়ীর ব্যাটিং দাপটে গল টেস্টে দাপট দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। আগের দিনের ৩ উইকেটে ২৯২ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত ১৩৬ আর মুশফিকুর রহিম ছিলেন ১০৫ রানে। বাংলাদেশ শিবিরে আশা ছিল শান্ত ২০০ রানের ইনিংস খেলতে পারবেন। এগোচ্ছিলেনও ঠিক সেভাবেই। কিন্তু ভুলটা করে বসলেন হঠাৎ করেই। দ্বিতীয় দিনের সপ্তম ওভারে শ্রীলঙ্কার পেসার আসিথা ফার্নান্দোর বলে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন শান্ত। কিন্তু শটটি ভালো হয়নি। মিডঅফে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের হাতে ক্যাচ হয়ে ফিরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। থামে টাইগার অধিনায়কের ২৭৯ বলে ১৪৮ রানের ইনিংস। অথচ ক্যারিয়ার সেরা ১৬৪ রান টপকানোর খুব কাছেই চলে গিয়েছিলেন শান্ত। দারুণ এই ইনিংস খেলার পথে ১৫টি চার ও ১টি ছক্কা মেরেছেন। শান্তর বিদায়ে ভাঙে চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশের ২৬৪ রানের অনবদ্য জুটি। সেখানেও একটি রেকর্ড মিস করেন দুজন মাত্র ২ রানের জন্য। টেস্ট ক্রিকেটে চতুর্থ উইকেটে ২৬৬ রানের জুটিটা ভাঙা হলো না।

৪০০ পার করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। শান্তমুশফিকের মতো চাপে থাকা লিটনও দারুণ শুরু করেন চাপ সরিয়ে। পঞ্চম উইকেটে ১৪৯ রানের জুটি গড়েন মুশফিক ও লিটন। মুশফিক ফিরলে ভাঙে এজুটি। আসিথা ফার্নান্ডোর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন মুশফিক। ফিরে আসার আগে করেন ১৬৩ রান। ৩৫০ বলের ধৈর্যশীল এই ইনিংসে ইনিংসে ৯টি চার মারেন মুশফিক। দলের সবচাইতে অভিজ্ঞ এই ব্যাটারকেও ফিরতে হলো হতাশা নিয়ে। আরো একটি ডাবল সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে গিয়েও সেটা আর পাওয়া হলো না তার। মুশফিক ফেরার পরের ওভারেই ভুল করে বসেন লিটন। সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় এসে রিভার্স সুইপ খেলতে যান রথনায়েকে। গ্লাভসে লেগে বল উপরে উঠে যায়। উইকেটরক্ষক নেন সহজ ক্যাচ। ১২৩ বলে ১১টি চার আর ১টি ছক্কায় ৯০ রানেই থামে লিটনের নজরকাড়া ইনিংসটি।

এরপর শুরু হয় মূলত বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে ধ্বস। তখন দলের স্বীকৃত ব্যাটার বলতে ছিলেন জাকের আলী। কিন্তু তিনি বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। পেসার মিলান রথনায়েকের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেও স্টাম্প হারান তিনি। ৮ রান করেই সাজঘরে ফেরেন জাকের। নিজের পরের ওভারে রথনায়েকে বোল্ড করেন তাইজুল ইসলামকেও। ৬ রান করেন এই স্পিনার। এক ওভার পর আবার সেই রথনায়েকের শিকার। বেরিয়ে যেতে থাকা বলকে অযথা ব্যাটে লাগিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নাইম হাসান। ১১ রান করেন এই স্পিনার। ওভারের পরের ৫ বল কোনমতে কাটিয়ে দেন নাহিদ রানা। আর তাতেই ৪৮৪ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ। বাকি এক উইকেট নিয়ে আজ তৃতীয় দিন আবার ব্যাট করতে নামবে বাংলাদেশ। সে উইকেট হারিয়ে আর কত রান যোগ করতে পারে টাইগাররা সেটাই এখন দেখার। যদিও বাংলাদেশ এখনো ৫০০ রানের স্বপ্ন দেখছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএনসিসিকে আমরা সমর্থন করতে পারি না : সালাহউদ্দিন
পরবর্তী নিবন্ধনাতি-নাতনির মৃত্যুর পর এবার গোসলে নেমে নারী নিখোঁজ