গরিব রোজাদারকে ইফতারে শামিল করা অতীব পুণ্যময় আমল

আ ব ম খোরশিদ আলম খান | বৃহস্পতিবার , ৬ মার্চ, ২০২৫ at ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ

দিনভর কঠিন সিয়াম সাধনা শেষে রোজাদারের নিরন্ন মুখে যেন হাসির ঝিলিক এনে দেয় ইফতার। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার অন্যতম অনুষঙ্গ ইফতারকে ঘিরে রোজাদাররা অন্য রকম আনন্দে মেতে ওঠে। এমনও দেখা যায়, গরিবধনী নির্বিশেষে সর্বস্তরের রোজাদাররা ইফতারে একাকার হয়ে যায় এই মহিমান্বিত রোজার মাসে। সবাই মিলে এক কাতারে বসে ইফতারে শামিল হওয়া মাহে রমজানের মহত্তম বিশেষ ইসলামী সংস্কৃতির জানান দেয়। ইফতার সামনে রেখে রোজাদার প্রতীক্ষায় থাকেন কখন ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসবে। সামনে যথেষ্ট উপাদেয় খাদ্য পানীয় মজুদ, অথচ নির্দিষ্ট সময়ের আগে রোজাদার ইফতার করেন না। মহান আল্লাহর ভয় এবং তাঁরই নির্দেশনার প্রতিপালন করতে গিয়ে রোজাদার নির্দিষ্ট সময়ের এক মুহূর্ত আগেও ইফতার করার কথা ভাবতে পারেন না। এটাই হলো আল্লাহ পাকের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য এবং তাঁরই নির্দেশনা প্রতিপালনের বহিঃপ্রকাশ। ইফতার হলো উম্মতে মুহাম্মদি তথা রোজাদারদের জন্য বড় ধরনের খোদায়ী পুরস্কার। হাদিসগ্রন্থ মুসলিম শরিফে এসেছে, ‘রোজাদার ব্যক্তির দুটো আনন্দ রয়েছে, একটি হলো ইফতারের সময়, আর অপরটি তার রবের (আল্লাহর) সঙ্গে মুলাকাতের সময়। আর রোজাদার ব্যক্তির মুখের গন্ধ আল্লাহ পাকের নিকট মিশক আম্বরের চেয়েও অধিক পছন্দের।’ (মুসনাদে আহমদ, খণ্ড ১৫, পৃষ্ঠা ৩৪৮)। নবী করিম () বলেছেন, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রাসূলে পাক () বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই রোজাদার ব্যক্তির জন্য তার ইফতারের সময় এমন দু’আ করার সুযোগ আছে যা ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।’ (জামে তিরমিজি, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ১৩৭) রোজাদারকে ইফতার করানো অতীব পুণ্যময় আমল। লক্ষ্য রাখতে হবে, কেবল ধনীদের ঘিরে অপচয় নির্ভর ইফতার সংস্কৃতি গরিব দেশে মানায় না। আপনার চারপাশে অসংখ্য গরিব রোজাদার আছেন, যারা এক মুঠো ছোলা, একটি খেজুর বা এক গ্লাস শরবত দিয়েও ইফতার করার সামর্থ্য রাখেন না। অথচ ধনীদের ইফতারের টেবিলে শোভা পায় বাহারি দামি ইফতার। ধনীরা একটু খরচ কমিয়ে গরিব রোজাদারদেরকেও ইফতারের আনন্দে শামিল করতে পারেন। এতে মহান আল্লাহ পাকের নৈকট্য ও সন্তুষ্টি আশা করা যায়। কোনো রোজাদারকে সাহরি ও ইফতারে শামিল করলে সে রোজা রেখে যতটুকু সওয়াব পাবে, অনুরূপ সওয়াব পাবেন যিনি সাহরি ও ইফতার করাবেন। ইফতারের আইটেম সামান্য পরিমাণও হতে পারে। একটি খেজুর, এক গ্লাস শরবত কিংবা শুধু সুপেয় পানি দিয়ে হলেও গরিব রোজাদারকে ইফতার করানো যায়। ইফতারের আয়োজনে অপচয়ের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে বিত্তবান রোজাদারদেরকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাকিস্তান থেকে ২৬ হাজার টন চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে এলো জাহাজ
পরবর্তী নিবন্ধঅবশেষে দেখা মিলছে বোতলজাত সয়াবিনের, ‘উধাও’ খোলা তেল