গভর্নরের পদ ছাড়লেন আব্দুর রউফ তালুকদার

| শনিবার , ১০ আগস্ট, ২০২৪ at ৬:৩৬ পূর্বাহ্ণ

গণ আন্দোলনে ক্ষমতার পালাবদলের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অস্থিরতা শুরুর প্রেক্ষাপটে গভর্নরের পদ ছাড়লেন শেখ হাসিনার আমলে নিয়োগ পাওয়া আব্দুর রউফ তালুকদার। গতকাল শুক্রবার রাতে তিনি বলেন, দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছি। পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।

অর্থমন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব থাকা অবস্থায় ২০২২ সালের জুলাই মাসে চার বছরের জন্য গর্ভনরের দায়িত্ব পেয়েছিলেন আব্দুর রউফ তালুকদার। সেজন্য চাকরির মেয়াদের এক বছর আগেই অবসর নিতে সচিব পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন তিনি। গভর্নরের পদ থেকে তাকে বিদায় নিতে হল মেয়াদের দুই বছর বাকি থাকতে। খবর বিডিনিউজের।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ছুটি বাতিল করে ৬ আগস্ট থেকে অফিস খোলার নির্দেশনা আসে। তবে আব্দুর রউফ তালুকদার আর অফসে ফেরেননি। গতকাল ছুটির দিনে তিনি পদত্যাগ করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবের মাধ্যমে।

গত বুধবার গভর্নর এবং চার ডেপুটি গভর্নরের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। পর তারা ঠিক করেন, নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হলে গভর্নরসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবি তারা সরকারের কাছে তুলবেন।

তাদের অভিযোগ ছিল, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা অপকর্মে জড়িয়ে গেছে। ডেপুটি গভর্নররা কোনো কাজ সঠিকভাবে করতে পারেন না। অর্থ পাচার আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনাগুলোতে তারা সঠিক পদক্ষেপ নেননি। কোভিড মহামারী পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি পুণরুদ্ধারের কার্যক্রম শুরুর পর্যায়ে দায়িত্বে এসে কয়েকটি নজীরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি দশ দুর্বল ব্যাংক শনাক্ত করে তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও তাতে ব্যাংকগুলোর স্বাস্থ্যগত উন্নয়ন হয়নি। তার সময়ে শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় জামানত ছাড়াই হাজার হাজার কোটি টাকার তারল্য সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতিতে সংস্কার করলেও গত দুই বছর ধরেই তা ১০ শতাংশের কাছকাছি রয়েছে। ডলারের বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার ঘোষণা এক বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি। ডলার ব্যবস্থাপানায় দুর্বলতায় গত দুই বছরে টাকার মান কমেছে ২৪ টাকা ৫৫ পয়সা বা ২৬ দশমিক ২৭ শতাংশ। মাঝখানে খোলা বাজারে ডলারের দর উঠেছিল সর্বোচ্চ ১২৫ টাকায়। রউফ তালুকদারের মেয়াদে গত দুই বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫৭ হাজার ৩৮ কোটি টাকা। অতীতে এত অল্প সময়ে এত বেশি পরিমাণে খেলাপি ঋণ আর কখনো বাড়েনি।

সবশেষ দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা নতুন আলোচনার জন্ম দেয়। ঋণ অনিয়মে ডুবতে বসা পদ্মা ব্যাংক (সাবেক ফারমার্স) একীভূত হওয়ার জন্য চুক্তি করে শরিয়াহভিত্তিক এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে। রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চুক্তি করে বিডিবিএল ব্যাংক। এর সবই হয় গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের অনুমোদনে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাজনীতিতে আসছেন জয়
পরবর্তী নিবন্ধ২২ জেলায় শিল্পকলায় হামলা,ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ চুরি