প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার সংরক্ষণ করে দর বৃদ্ধির ‘প্রমাণ পাওয়ায়’ ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম গতকাল সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ট্রেজারি অপারেশনে অতিরিক্ত মুনাফা করায় পাঁচটি দেশি এবং একটি বিদেশি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। খবর বিডি/বাংলানিউজের।
গতকাল ব্যাংকগুলোর কাছে সবশেষ ৯৪ টাকা ৯৫ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার ডলারের দাম ছিল ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা। একদিনের ব্যবধানে টাকার মান কমেছে ২৫ পয়সা। অন্যদিকে খোলাবাজারেও ডলারের দাম বেড়েই চলেছে। গতকাল সোমবার খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকায়, যা দেশের ইতিহাসে ডলারের রেকর্ড দাম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেকজন কর্মকর্তা বলেছেন, ডলার সংরক্ষণ করে দর বৃদ্ধির ‘প্রমাণ পাওয়ায়’ ৬ ব্যাংকের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওই ছয় ব্যাংককে ইতোমধ্যে চিঠি পাঠিয়ে তাদের ট্রেজারি প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতার মধ্যে গতবছরের শেষ দিক থেকে ডলারের দাম বাড়ছিল। এ বছরের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে খোলা বাজারে ডলারের বিনিময় হার প্রথমবারের মত ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক দফায় দফায় বাজারে ডলার ছাড়ার পাশাপাশি কিছু পদক্ষেপ নেওয়ায় সে সময় পরিস্থিতি কিছুটা সামলে উঠতে পারলেও জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে আবার এই আন্তর্জাতিক মুদ্রার বিনিময় হার ১০০ টাকা ছাড়ায়। ২৮ জুলাই তা ১১১ টাকা ছাড়িয়ে যায়, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ। ডলারের দরে এই সংকটের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, এর পেছনে ‘কিছু কারসাজি’ চিহ্নিত করেছে সরকার। ওই সময়ই মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে অভিযান শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেউ যাতে দাম বাড়ানোর জন্য ডলার মজুদ না করে, সে বিষয়ে আইনশৃক্সখলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। ২ অগাস্ট পর্যন্ত ৮০টি মানি চেঞ্জারে অভিযান চালিয়ে ৪২টিতে অনিয়ম পাওয়ায় কারণ দর্শানোর (শো কজ) নোটিস দেওয়া হয়। এছাড়া পাঁচটি মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিতের কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।