সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে খেজুর আমদানির ঘোষণা দিয়ে নগরীর কোতোয়ালির জুবিলী রোডের সূচনা ইন্টারন্যাশনাল ৫৫ লাখ ৫২ হাজার ৪০০ শলাকা মন্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট নিয়ে আসে।
মিথ্যা ঘোষণায় সিগারেট আমদানির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৭ কোটি ১১ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করেছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসাচ (এআইআর) শাখা।
আজ সোমবার পণ্য চালানটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষা শেষে রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি উদঘাটিত হয়।
এআইআর শাখা সূত্রে জানা গেছে, আমদানিরকারক প্রতিষ্ঠান সূচনা ইন্টারন্যাশনালের মালিক ফটিকছড়ি উপজেলার ভক্তপুর গ্রামের দৌলতবাড়ির আবু তাহেরের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। সূচনা ইন্টারন্যাশনাল দুবাই থেকে খেজুর ঘোষণা দিয়ে ৪০ ফুট সাইজের কন্টেনারে মোট ২ হাজার ৭৭২টি কার্টন আমদানি করে।
এর মধ্যে ১ হাজার ৯৮৩ কার্টনে সুকৌশলে উপরে খেজুর দিয়ে ভেতরে সিগারেট রাখা হয়। কন্টেনারটিতে ৭৮৯ কার্টনে শুধু খেজুর পাওয়া যায়। পুরো চালান পরীক্ষা শেষে ৫৫ লাখ ৫২ হাজার ৪০০ শলাকা মন্ড ব্রান্ডের সিগারেট ও ১১ হাজার ৮৫৬ কেজি খেজুর পাওয়া যায়।
সিগারেটের আনুমানিক বাজারমূল্য ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। যার মাধ্যমে ৭ কোটি ১১ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করেছে আমদানিকারক। এর আগে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেল আমদানিকারক বিল অব এন্ট্রি দাখিল না করায় গত ২৪ এপ্রিল কন্টেনারটি ফোর্স কিপডাউন করে শতভাগ কায়িক পরীক্ষার জন্য বেসরকারি অফডক ইস্পাহানি সামিট অ্যালায়েন্স টার্মিনাল লিমিটেডকে চিঠি দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
তারও আগে চালানটি আমদানির জন্য গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেডের খাতুনগঞ্জ শাখায় ঋণপত্র (এলসি) খুলে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর আমিরাতের জেবেল আলী বন্দর থেকে চালানটি জাহাজিকরণ হয়। ৩০ ডিসেম্বর চালানটি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। পরে চট্টগ্রাম কাস্টমসের পোর্ট কন্ট্রোল ইউনিট (পিসিইউ) ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় পণ্য রপ্তানিকারক দেশ, তৈরি দেশ ও আমদানিকারকের ব্যবসায়ীক ধরন পর্যালোচনা করে চালানটিতে মিথ্যা ঘোষণা দেওয়ার বিষয়টি নজরে আসে।
পরে কাস্টমসের এআইআর শাখা চালানটির বিল অব লিডিং লক করে খালাস কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার (এআইআর শাখা) মো. শরফুদ্দিন মিঞা বলেন, মিথ্যা ঘোষণায় খেজুর আমদানির আড়ালে বিদেশি ব্র্যান্ডের উচ্চ শুল্কের সিগারেট আমদানি করার দায়ে আমরা চালানটির খালাস কার্যক্রম স্থগিত করি।
পরে আমরা কন্টেনার ফোর্স কিপডাউন করে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন করি। কায়িক পরীক্ষায় দেখা গেছে, আমদানিকারক বিদেশি সিগারেট আমদানির মাধ্যমে প্রায় ৭ কোটি ১১ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করেছে। আমদানিকারকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কাস্টমস আইনে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।