চট্টগ্রাম আদালত পাড়া এলাকায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার অন্যতম আসামি রিপন দাস। আলিফের ঘাড়ে বঁটি দিয়ে উপর্যুপরি কোপ দিয়েছেন, ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন তিনি। গতকাল চট্টগ্রামের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালতে রিপন দাস এ জবানবন্দি দেন। রিপন দাস নগরীর চকবাজারের ফার্মেসী দোকানে কাজ করতেন। আনোয়ারা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) মাহফুজুর রহমান দৈনিক আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আদালতসূত্র জানায়, আলিফ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজন আসামি ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। রিপনের আগে গত শুক্রবার রাজিব ভট্টাচার্য্য ও গত সোমবার মামলার প্রধান আসামি চন্দন দাশ আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। রাজীব ভট্টাচার্য্য তার জবানবন্দিতে বলেছিলেন, রিপন দাস–ই আলিফকে বঁটি দিয়ে কুপিয়েছেন। নগরীর নিউমার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ আগস্ট ঢাকা থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তথা ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয়। তার পক্ষের আইনজীবীরা তার জামিন চেয়ে সেদিন একটি আবেদন করেন। শুনানি শেষে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম জামিন না–মঞ্জুর করে চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পুলিশ যখন চিন্ময়কে প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাবে তখন আগে থেকে জড়ো হওয়া তার অনুসারীরা প্রিজন ভ্যানের গতিরোধ করে এবং প্রিজন ভ্যানের সামনে পিছে শুয়ে পড়ে। একপর্যায়ে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা পর লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানকে কারাগারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা আদালত পাড়ায় ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর করে। শুরু হয় সংঘাত। এক পর্যায়ে আদালতের প্রবেশ গেটের অদূরে খুন হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতটি মামলা দায়ের হয়েছে। এরমধ্যে কোতোয়ালী থানায় ৬টি ও আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়। পুলিশ জানায়, কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে ৭৯ জনের নামে তিনটি, আলিফের বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নামে একটি (হত্যা মামলা) ও তার ভাই বাদী হয়ে ১১৬ জনের নামে একটি ও মোহাম্মদ উল্লাহ নামের এক ব্যবসায়ী ২৯ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া সর্বশেষ মো. এনামুল হক নামের একজন বাদী হয়ে ১৬৪ জনের নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আদালত সেটি কোতোয়ালী থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।