দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত রেখে তার সাময়িক মুক্তির মেয়াদ আরো ৬ মাস বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। তবে চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে পরিবারের করা আবেদনের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় কোনো মতামত দেয়নি বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন। রোববার সকালে তিনি বলেন, ‘পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উনার মুক্তির মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানোর জন্য মতামত দিয়েছি। কিন্তু বিদেশে যাওয়ার জন্য কোনো মত দিইনি। এই সংক্রান্ত ফাইল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ খবর বিডিনিউজের।
নিয়ম অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ফাইলটি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানোর কথা। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে বলে জানান আইন মন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সরকারি সফরে জার্মানিতে রয়েছেন। রোববারই তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। আনিসুল হক আগেই বলেছিলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রার আবেদন বিবেচনার সুযোগ নেই। তাকে কারাগারে ফিরে তবেই আবেদন করতে হবে।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে কারাগারে যাওয়ার পর গত বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটলে পরিবারের আবেদনে সরকার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। সরকারের নির্বাহী আদেশে ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ৪০১ (১) ধারা অনুযায়ী সাজা স্থগিত হলে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ গুলশানের বাসায় ফেরেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা। এর মধ্যে তিনি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাও নেন। এ পর্যন্ত তার সাজার স্থগিতাদেশ দুই দফা বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ গত মার্চ মাসে আরও ৬ মাস বৃদ্ধি করে সরকার, যা ১৫ সেপ্টেম্বর শেষ হচ্ছে। প্রতিবারই তার সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে দুটি শর্তে। মুক্ত থাকার সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। সিআরপিসির ৪০১(১) ধারায় বলা আছে, যখন কোনো ব্যক্তিকে অপরাধের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়, তখন সরকার যে কোনো সময় শর্ত ছাড়াই অথবা শর্তসাপেক্ষে শাস্তি স্থগিত করতে পারে অথবা তাকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তার পুরো বা যে কোনো অংশ স্থগিত করতে পারে।