দেশের চলমান সংকটে খাগড়াছড়ির পর্যটন অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন হোটেল ও পরিবহন শ্রমিকেরা। কোটা আন্দোলনকে ঘিরে গত বুধবার থেকে চলা সংঘাতের জেরে ধস নেমেছে পর্যটন খাতে। বাতিল হয়ে গেছে অনেক হোটেলের আগাম বুকিং।
সরেজমিনে খাগড়াছড়ির প্রধান পর্যটন কেন্দ্র আলুটিলা, রিসাং ঝরনা, জেলা পরিষদ পার্কসহ প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে কোনো পর্যটক দেখা যায়নি। খাগড়াছড়ির বেসরকারি আবাসিক হোটেল গাইরিংয়ের ব্যবস্থাপক প্রান্ত বিকাল ত্রিপুরা জানান, বৃহস্পতিবার থেকে টানা শনিবার পর্যন্ত টানা বন্ধে আমাদের হোটেলের ৮০ শতাংশ রুম বুকিং ছিল। কিন্তু চলমান পরিস্থিতিতে সবাই রুম বুকিং বাতিল করেছে। এতে আমাদের অন্তত ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
হোটেল গ্রীন স্টারের উপ–ব্যবস্থাপক অভিজিৎ বড়ুয়া রুদ্র বলেন, সাম্প্রতিক বন্যা ও পাহাড় ধসের কারণে এমনিতেই পর্যটক সমাগম কম। তার উপর এখন চলমান পরিস্থিতির কারণে আমাদের ব্যবসায় ধস নেমেছে। কোনো পর্যটক নেই। হোটেলের ৪০ শতাংশ আগাম বুকিং ছিল। সেগুলোও বাতিল হয়েছে। পর্যটক না আসলেও হোটেলের কর্মচারীদের বেতন দিতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য ব্যয় করতে হচ্ছে। এভাবে দীর্ঘদিন চললে ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পর্যটক না আসায় বেকার সময় কাটাচ্ছে পরিবহন শ্রমিকেরা। আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন পার করছেন শ্রমিকেরা।
দীঘিনালার জীপ (চাঁন্দের গাড়ি) পরিবহন মালিক পলাশ দে বলেন, প্রতি শুক্রবার দীঘিনালা থেকে অন্তত ১০০ চাঁন্দের গাড়ি সাজেকে পর্যটক নিয়ে যায়। কিন্তু এই সপ্তাহে একটি গাড়িও যায়নি। বেকার হয়ে পড়েছে পরিবহন শ্রমিকেরা। স্বাভাবিক অবস্থায় না ফিরলে শ্রমিকদের জীবন জীবিকা থমকে যাবে। পর্যটন না থাকায় শতাধিক পরিবহন শ্রমিক ও কর্মচারী বেকার হয়ে গেছে। খাগড়াছড়ির প্রধান পর্যটন কেন্দ্র আলুটিলার তত্ত্বাবধায়ক চন্দ্র কিরণ ত্রিপুরা বলেন, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে প্রতিদিন গড়ে ৫শ পর্যটক আলুটিলায় ভ্রমণ করে। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে কোনো পর্যটক নেই বললেই চলে। পর্যটক না আসায় সুনসান নিরবতা নেমে এসেছে।