খাগড়াছড়িতে শুরু হয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু সাংগ্রাই ও বৈসু উদযাপন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার প্রত্যন্ত জনপদ পোমাং পাড়ায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসু উৎসব উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী। বৈসু উদযাপন উপলক্ষে সকাল থেকে বিভিন্ন গ্রাম থেকে নারী, শিশু ও তরুণ–তরুণীরা অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। এসময় আগত অতিথিদের সামনে গরিয়া বা গরয়া নৃত্য পরিবেশন করে ত্রিপুরা নৃত্য দল। এছাড়া দিনা ড্যান্স একাডেমির শিল্পীরা বোতল নৃত্যের মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করে। পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করতে আয়োজন করা হয় ঐতিহ্যবাহী এ উৎবের।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মংসুইপ্র চৌধুরী বলেন, আজকে পাহাড়ে মানুষ শান্তি ও সম্প্রীতির বন্ধনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের সামাজিক উৎসব পালন করছে। আজ থেকে পাহাড়ে বৈসাবি উদযাপন শুরু হলো। আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত নানা বর্ণিল উৎসব এখানকার মানুষ নতুন বছরকে বরণ করে নেবে।
জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক বলেন, যদিও বৈসু ১২ তারিখ থেকে শুরু হবে কিন্তু এখন থেকে বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। এখানে একটি বিষয় আমাদের দেখতে হবে, আমরা ঐতিহ্যগতভাবে যেগুলো উদযাপন করে আসছি সেখানে অর্থনৈতিক বিষয়টা তেমন ছিল না। পারিবারিকভাবে, সামাজিকভাবে গ্রাম ভিত্তিক প্রোগ্রামগুলো করতাম। ছড়ায় ফুল পূজা, চড়ক পূজা করা হত সেগুলো অনেকটা পরিবর্তন হয়ে গেছে। সবকিছুতেই একটা বাণিজ্যিক ব্যাপার হয়ে গেছে। আমাদের প্রকৃত যে ঐতিহ্য সেগুলো ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন আছে। বৈসু উদযাপন কমিটির প্রধান আয়োজক কার্তিক ত্রিপুরা বলেন, ত্রিপুরাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। যুগ যুগ ধরে আমাদের যে সংস্কৃতির চর্চা হয়ে আসছিল তা কালের বির্বতনে পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। নিজের স্বকীয়তা রক্ষায় বৈসু উদযাপনের গুরুত্ব রয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কাশেম, ভাইস চেয়ারম্যান সীমা দেওয়ান, মেরং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ঘনশ্যাম ত্রিপুরা প্রমুখ।