খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা ও পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে ৬৬ ভারতীয় নাগরিককে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী–বিএসএফ। গতকাল বুধবার ভোর সাড়ে ৪টা থেকে মাটিরাঙা তাইন্দং সীমান্ত দিয়ে ১৫ জন, গোমতি ইউনিয়নের শান্তিপূর সীমান্ত দিয়ে ২৭ জন ও পানছড়ির লোগাং ইউনিয়নের রুপসেন পাড়া সীমান্ত দিয়ে ২৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করায় বিএসএফ। অন্যদিকে বিএসএফ কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে আরও ৪৪ জনকেসহ মোট ১১০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে বলে জানা যায়।
খাগড়াছড়ির ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা জানান, সর্বশেষ খবর পর্যন্ত ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিককে অনুপ্রবেশ করানো হয়েছে। বিষয়টি বিজিবি দেখভাল করছে। বিজিবির সাথে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে। আমরা তাদেরকে দ্রুত পুশব্যাক করানোর চেষ্টা করছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোরে ৪০ বিজিবি খেদাছড়া ব্যাটালিয়নের শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে ২৭ জন ভারতীয়কে অনুপ্রবেশ করানো হয়। অনুপ্রবেশের পর তারা গোমতী ইউনিয়নের হাজীপাড়া আবুল মাস্টারের বাড়িতে অবস্থান করে। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পাওয়ার পর বিজিবির একটি টহল দল তাদের আটক করে। আটককৃত ব্যক্তিরা নিজেদের গুজরাটের বাসিন্দা বলে দাবি করেন। তারা জানায়, তাদেরকে গুজরাট থেকে বিমানে করে সীমান্তে নিয়ে এসে বিএসএফ সদস্যরা শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। আটককৃতরা বাংলা ভাষাভাষী।
বিডিনিউজ জানায়, কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী–বিএসএফ শতাধিক মানুষকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে আটজন বাংলাদেশি এবং অন্যরা নিজেদের রোহিঙ্গা ও ভারতের গুজরাটের বাসিন্দা বলে দাবি করছেন। বুধবার সকালে অনুপ্রবেশের দায়ে কুড়িগ্রাম জেলা থেকে ৪৪ জনকে এবং খাগড়াছড়ি থেকে ৬৬ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
কুড়িগ্রাম জেলা থেকে আটকদের মধ্যে ৩০ জনকে রৌমারী উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে এবং ১৪ জনকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ভাওয়ালকুরি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে (পুশইন) বিএসএফ।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ভোরে রৌমারীর বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ৩০ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করা হয়েছে। প্রাথমিক যাচাই–বাছাইয়ে ধারণা করা হচ্ছে, এদের মধ্যে ২২ জন রোহিঙ্গা। আর আটজন বাংলাদেশি। আটকদের পরিচয় চূড়ান্ত যাছাই–বাছাই শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।
রৌমারীর সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা সাদিক হোসেন বলেন, বুধবার সকালে বেশ কিছু নারী–পুরুষকে সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন বাজারে বিক্ষিপ্তভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। এ সময় কথাবার্তা সন্দেহজনক হলে তাদের আটক করে বিজিবি ও রৌমারী থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। তারা বিজিবির হেফাজতে আছে।
কুড়িগ্রাম ২২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাহবুব উল হক বলেন, ভূরুঙ্গামারীর ভাওয়ালকুরি সীমান্ত এলাকায় আট নারী–শিশুসহ ১৪ জনকে পুশইন করে বিএসএফ। বুধবার সকালে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের আটক করা হয়েছে। তারা সবাই রোহিঙ্গা।