এবারের ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের নকআউট পর্বে ওঠাই ছিল চমক। কিন্তু দলটি যেভাবে লড়াই করেছে, সেটি সত্যিই অপূর্ব–অসাধারণ। শেষ ষোলো থেকে উঠেছে কোয়ার্টার ফাইনালে, সেখান থেকে সেমিফাইনালে। ততক্ষণ পর্যন্ত সবকিছু যেন স্বপ্নের মতোই হয়েছে। সেমিতে ওঠার পর ফ্লুমিনেন্সকে নিয়ে ভক্তদের স্বপ্ন আরও বড় হয়েছে। তারা প্রত্যাশা করেছিলেন, হয়তো সেমিতেও চেলসির বিপক্ষে কোনো না কোনো চমক দেখিয়ে ফাইনালে যেতে পারবে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটি। যে কারণে ক্লাব বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালের দিকে তীক্ষ্ম চোখ ছিল ফুটবলপ্রেমীদের। কিন্তু সেটি আর হলোনা। ঘরের ছেলের কাছেই কুপোকাত হলো ব্রাজিলের ক্লাবটি। যে ছেলেটিকে স্বপ্নের পথ দেখিয়েছিল সেই পেদ্রো সর্বনাশ করে দিল ফ্লুমিনেন্সের।
নতুন ঠিকানায় আসার সপ্তাহখানেকের মাথায় প্রথমবার চেলসির শুরুর একাদশে নামলেন জোয়াও পেদ্রো । আর নেমেই হয়ে উঠলেন দলের মধ্যমণি। চমৎকার দুটি গোল করে গড়ে দিলেন ব্যবধান। ফ্লুমিনেসিকে হারিয়ে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল চেলসি। নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে প্রথম সেমি–ফাইনালে ২–০ গোলে জিতেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দলটি। ম্যাচ শুরুর ১৮ মিনিটের মধ্যে জালের দেখা পান পেদ্রো। প্রতিপক্ষের দুর্বলতায় বঙের বাইরে বল পেয়ে চমৎকার বাঁকানো শটে দলকে এগিয়ে নেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। শৈশবের এই ক্লাবের হয়েই পেশাদার ফুটবলে যাত্রা শুরু করেন পেদ্রো। যেই ক্লাব একসময় তার ‘নিজের বাড়ির’ মতো ছিল, তাদের বিপক্ষে গোল করে উদযাপন করেননি তিনি। ২৬ মিনিটে পাল্টা জবাব দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল ফ্লুমিনেসি। কিন্তু ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে হারকিউলিসের শট গোললাইন থেকে ফেরান মার্ক কুকুরেইয়া। আট মিনিট পর আবার বিপদে পড়তে বসেছিল চেলসি। তাদের ডি–বঙে ডিফেন্ডার ট্রেভর চালাবাহর হাতে বল লাগলে প্রথমে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি, তবে পরে ভিএআর মনিটরে দেখে সিদ্ধান্ত পাল্টান তিনি।
বিরতির পর খেলার ৫৬ মিনিটে অসাধারণ নৈপুণ্যে দ্বিতীয় গোলটি করেন পেদ্রো। এনসো ফের্নান্দেসের থ্রু বল ধরে, ডি–বঙে ঢুকে জোরাল শট নেন পেদ্রো। বল ক্রসবারের নিচের দিকে লেগে ঠিকানা খুঁজে পায়। এবারও একই ভঙ্গিমায় দুই হাত ওপরে তুলে ধরেন পেদ্রো। শেষ দিকে ঘর সামলানোয় বাড়তি মনোযোগ দেয় চেলসি। সুযোগে আক্রমণে চাপ বাড়ায় ফ্লুমিনেসি। কিন্তু লড়াইয়ে কোনোরকম নাটকীয়তা ফেরাতে পারেনি তারা। ফলে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয় ব্রাজিলের দলটিকে। আর ইংলিশ ক্লাব চেলসি পৌছে যায় ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে।