নগরীর মার্কেটগুলোতে শুরু হয়েছে জমজমাট বেচাবিক্রি। ইফতারের পর ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে ছোট বড় প্রতিটি মার্কেট। পছন্দের পণ্যটি কেনার জন্য ক্রেতারাও এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেটে হন্যে হয়ে ছুটছেন। অপরদিকে বেচাবিক্রি বাড়ায় বিক্রেতাদের মুখেও ফুটেছে হাসি। বিক্রেতারা বলছেন, এ বছর আশানুরূপ বেচাবিক্রি হচ্ছে।
গতকাল নগরীর টেরিবাজার, নিউমার্কেট বিপণি বিতান, রেয়াজুদ্দিন বাজার, তামাকুমণ্ডি লেইন, জহুর হকার্স মার্কেট, বালি আর্কেড, কেয়ারি ইলিশিয়াম, সেন্ট্রাল প্লাজা, মিমি সুপার মার্কেট, আফমি প্লাজা, ফিনলে স্কয়ার, শপিং কমপ্লেক্স, স্যানমার ওশ্যান সিটি, ইউনেস্কো সিটি সেন্টার, আমিন সেন্টার, ভিআইপি টাওয়ার, ফিনলে সাউথ সিটি, আখতারুজ্জামান সেন্টার, সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট এবং মতি টাওয়ারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রত্যেকটি দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। কারো যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। ক্রেতাদের আকর্ষণে বিরতিহীনভাবে বিভিন্ন ধরনের পোশাক এবং পণ্যের কালেকশন দেখানো হচ্ছে। ক্রেতারা আগ্রহ নিয়ে সেইসব পণ্য দেখছেন। বিক্রেতার সাথে দরেদামে মিললে টাকা পরিশোধ করে বাড়ির দিকে পা বাড়াচ্ছেন। টেরি বাজারে আসা গৃহিণী উম্মে হাবিবা বলেন, বাচ্চার জন্য গেঞ্জি ও পাঞ্জাবি কিনতে এসেছি। গত বছরের চেয়ে জিনিসপত্রের দামও একটু বেশি। দামের বিষয় জানতে চাইলে ইমরান হোসেন নামের একজন বিক্রেতা জানান, পোশাকের আমদানি খরচ আগের চেয়ে বেড়েছে। এছাড়া বেড়েছে ব্যবসার পরিচালনা ব্যয়। তবে আমরা ক্রেতাদের কাছে ন্যূনতম লাভে পণ্য বিক্রি করে থাকি।
জিইসি মোড়ের সেন্ট্রাল প্লাজায় তরুণী তাহমিনা মান্নান বলেন, বান্ধবীর সাথে কসমেটিকস কিনতে এসেছি। দুইদিন আগে ফিনলে থেকেই নিজের জন্য গাউন এবং আম্মুর জন্য সেলোয়ার কামিজ নিয়েছিলাম। শপিং কমপ্লেক্সে আসা গৃহিনী জান্নাতুল নাইমা বলেন, প্রতি বছর ঈদের কেনাকাটা রমজানের প্রথম সপ্তাহে সেরে ফেলি। তবে এবার একটু বিলম্ব হয়েছে।
এদিকে পাঞ্জাবির শো রুমগুলোতে তরুণদের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিভিন্ন শো রুমে ছাড়মূল্যে পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে। তাই বিশেষ করে তরুণরা এসব শো রুমে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। আফমি প্লাজার অঞ্জন, সৃষ্টি, বাংলার মেলা, দেশাল, রঙ, সাদা কালো এবং শৈল্পিকের শো রুমে ক্রেতাদের আনাগোনায় মুখর। এসব শো রুমের বিক্রেতারা জানান, ইতোমধ্যে জমতে শুরু করেছে ঈদ বাজার। বরাবরের মতোই তরুণদের প্রথম পছন্দের শীর্ষে রয়েছে পাঞ্জাবি। তাই বিভিন্ন কালার ও ডিজাইনের প্রচুর পাঞ্জাবি এসেছে।
জহুর মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সদস্য সচিব ফজলুল আমিন দৈনিক আজদাীকে বলেন, হকার্স মার্কেট মূলত মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতারাই বেশি আসেন। কম দামে ভালো পণ্য পাওয়া যায় তাই ক্রেতারা আমাদের মার্কেটে কেনাকাটা করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এখন পর্যন্ত আমাদের মার্কেটে ভালো বেচাবিক্রি হচ্ছে।
টেরি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মান্নান বলেন, আমাদের মার্কেটে জমজমাট বেচাবিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত আমরা বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের মার্কেটে সব ধরণের মানুষের উপযোগী পণ্য রয়েছে। যার কারণে টেরিবাজারের আলাদা একটি সুনাম রয়েছে।
তামাকুমণ্ডি লেইন বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, তামাকুমণ্ডি লেইন এখন ভোররাত পর্যন্ত বেচাবিক্রি চলছে। সব ধরণের দোকানে এখন যথেষ্ট ভিড়।