বিশ্বকাপের আগে হঠাৎ করেই অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। এরপর নিজেকে বিশ্বকাপের দল থেকে প্রত্যাহার করে নেন। এরপর সাকিবের কাঁধে বর্তায় দেশের ক্রিকেটের দায়িত্ব। বিশ্বকাপের শেষের দিকে তিনি জানিয়ে দেন, বিশ্বকাপের পর তিনি আর অধিনায়ক থাকবেন না। এরমধ্যে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা ছিলই। সে সাথে বাংলাদেশ জাতীয় দলের নেতৃত্বে বদল আসার ইঙ্গিতও ছিল আগে থেকেই। অবশেষে এলো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। ২০২৪ সালের জন্য তিন সংস্করণে বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব দেওয়া হলো নাজমুল হোসেন শান্তকে। দলের টপ অর্ডার এই ব্যাটারের কাঁধেই এখন টাইগারদের দায়িত্ব। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গতকাল সোমবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে সাংবাদিকদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে শান্তর নেতৃত্ব পাওয়ার কথা ঘোষণা করেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসানের স্থলাভিষিক্ত হলেন শান্ত।
গত বছর ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ থেকেই জাতীয় দলের নেতৃত্বের বিবেচনায় দেখা গেছে শান্তকে। পঞ্চাশ ওভারের ওই টুর্নামেন্টে দলের সহঅধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সাকিবের ইনজুরির কারণে দুটি ম্যাচে নেতৃত্বও দেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। এবার চলতি বছরের জন্য তিন সংস্করণেই দায়িত্ব পেলেন এই ব্যাটসম্যান। সভায় দীর্ঘ আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, অধিনায়কত্বের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আজকের সভায় একটু বেশি সময় গিয়েছে। তিন সংস্করণে নাজমুল হোসেন শান্তকে অন্তত এই বছরের জন্য আমরা অধিনায়ক হিসেবে নির্ধারণ করেছি। নাজমুল হাসান জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরে চোখের সমস্যার কারণেই মূলত সাকিবের জায়গায় নতুন অধিনায়ক বেছে নিতে হয়েছে।
গত বিশ্বকাপের পর থেকেই অবশ্য এই দায়িত্ব পালন করছেন শান্ত। টপ–অর্ডার এই ব্যাটসম্যানের নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্ট এবং দেশের বাইরে গিয়ে ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ড সফরের দুই সিরিজে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শান্তর ডেপুটি ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে এবার নির্দিষ্ট মেয়াদে দায়িত্ব পাওয়ার পর শান্তর সহঅধিনায়ক কে হচ্ছেন তা জানাতে সময় চেয়েছে বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, আমরা মোটামুটি নির্ধারণ করে ফেলেছি, সহঅধিনায়ক কে হবে। তবে নির্দিষ্ট সিরিজে কোন ক্রিকেটার থাকছে, তার ওপর নির্ভর করে এটা পরিবর্তন হতে পারে। এটা আমরা একটু সময় নিচ্ছি। দুটো সংস্করণে আমরা এখনই বলে দিতে পারি। তবু একটু সময় নিচ্ছি। সহঅধিনায়ক খুব দ্রুতই জানিয়ে দেওয়া হবে।
শান্তর অধিনায়কত্বের অভিষেক বিশ্বকাপেরও আগে। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে ওই সিরিজের অধিনায়ক লিটন কুমার দাসের বিশ্রামে প্রথম নেতৃত্ব দেন শান্ত। তিন সংস্করণ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১১ ম্যাচে বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করেছেন এ বাঁহাতি টপ–অর্ডার ব্যাটসম্যান। তার নেতৃত্বে খেলা একমাত্র টেস্টে কিউইদের হারিয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া ওয়ানডেতে ছয় ম্যাচে ও টি–টোয়েন্টিতে তিন ম্যাচে জয় একটি করে। সামগ্রিক বাস্তবতায় বাংলাদেশের হয়ে সাকিবের অধিনায়কত্ব অধ্যায়ের সমাপ্তিই বলা যায়। তিন সংস্করণ মিলিয়ে ১২০ ম্যাচে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাকিব। তার অধিনায়কত্বে বাংলাদেশের জয় ৪৭টি।