বিবর্ণ ব্যাটিং আর ধারহীন বোলিং দুটো মিলেই বাংলাদেশের বড় হার ত্বরান্বিত হয়েছে উইন্ডিজের বিপক্ষে। গতকাল বৃহস্পতিবার নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে। এর আগে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডের কাছে হেরেছিল। জয়ে আসর শুরুর পর টানা দুই হারে সেমি–ফাইনালে যাওয়ার আশা অনেকটাই শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০ উইকেটে হারের পর টানা দুই জয়ে বি গ্রুপ থেকে শেষ চারে যাওয়ার লড়াইয়ে ভালো ভাবেই থাকল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এদিন ব্যাটিংয়ে উন্নতির বদলে আরও একবার পুরোনো চিত্রই দেখা গেল বাংলাদেশের মেয়েদের ব্যাটে। তাদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বড় হয়নি পুঁজি। ব্যাটিংয়ের সাথে সাথে এবার বোলাররাও পারেননি লড়াই করতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাই বড় ব্যবধানেই হার মেনে নিতে হয় বাংলাদেশকে।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২০ ওভার খেলে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৮ উইকেটে ১০৩। ওয়েস্ট ইন্ডিজ লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ১২.৫ ওভারেই। ওপেনার হায়লে ম্যাথুজ ২২ বলে ৩৪ রান করে মারুফা আকতারের বলে বোল্ড হয়ে যান। অপর ওপেনার স্টেফানি টেইলর রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরে যাওয়ার আগে ২৯ বলে ২৭ করে দিয়ে যান। ৫২ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে। শিমেন ক্যাম্পবেলা ১৬ বলে ২১ রান করে নাহিদা আকতারের বলে নিগার সুলতানার হাতে ধরা পড়েন। ৮৪ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতনের পর জয়ের লক্ষ্যে বাদ বাকি কাজ সেরে নেন ডিয়ান্ড্রা ডটিনের ৭ বলে ১৯ রান। ২ উইকেটে ১০৪ রানের লক্ষ্য পৌঁছে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ শুরুতে ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রান করে। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ১৮ রানের উদ্বোধনী জুটি পায় বাংলাদেশের মেয়েরা। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে ১২ বলে ৯ রান করে ফেরেন ওপেনার সাথী রাণী। পাওয়ার প্লের শেষ বলে আরেক ওপেনার দিলারা আক্তারও বোল্ড হন স্পিনার কারিশমা রামহারাকের বলে। ১৮ বলে ১৯ রান করেন তিনি। ছয় ওভারে ৩৩ রান তোলার পর বাংলাদেশের হাল ধরেন সোবহানা মোস্তারি ও নিগার সুলতানা জ্যোতি। ৪৩ বলে ৪০ রান আসে জুটি থেকে। ২২ বলে ১৬ রান করে রামহারাককে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হন সোবহানা মোস্তারি। তার বিদায়ের পর দ্রুতই আরও দুটি উইকেট হারিয়ে ভালো অবস্থা থেকে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। এফি ফ্লেচারের টানা দুই বলে ফেরেন স্বর্ণা আক্তার (০) ও তাজ নেহার (১)। তারা ফেরার পর জ্যোতির সঙ্গী হন রিতু মণি।
রিতু মণিকে সঙ্গে নিয়ে জ্যোতি দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন। এই জুটিতে ভর করেই একশ রান পার করতে পেরেছে বাংলাদেশ। যদিও তারা ইনিংস শেষ করে আসতে পারেননি। রিতু মণি ফিরে গেছেন আগেই। রামহারাকের ওভারে ১৩ বলে ১০ রান করে ক্যাচ দেন তিনি। জ্যোতির সঙ্গে ২৩ বলে ২১ রানের জুটি গড়েন রিতু। শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৪৪ বলে ৩৯ রান করে ফেরেন জ্যোতিও। ৬টি চার হাঁকান তিনি। জ্যোতির পর ফাহিমা খাতুন রান আউটের শিকার হন ৩ বলে ২ রান করে। রাবেয়া খাতুন ১ এবং নাহিদা আকতার ২ রানে অপরাজিত থাকেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে রামহারাক ১৭ রানে ৪টি উইকেট দখল করেন। এফি ফ্লেচার ২টি এবং হায়লে ম্যাথুজ ১টি উইকেট পান।
ম্যাচ সেরা হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কারিশমা রামহারেক।