অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর টেলিভিশনের দেয়া প্রথম ভাষণে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং লাইং বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবার ব্যাপারে যে চুক্তি আছে তাতে কোনো প্রভাব পড়বে না। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী যেভাবে গৃহহীন লোকজনকে বাংলাদেশ থেকে ফেরত নেবার কথা ছিল সেটা চলবে। বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরতের বিষয়ে একটি টুইট বার্তাও শেয়ার করেছেন তিনি। প্রত্যাবাসন নিয়ে মিনের বক্তব্য কীভাবে নিয়েছেন উখিয়া ও টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গারা? উখিয়ার বালুখালী ১০ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ফয়েজ আহমেদ রাখাইনে কয়েক মেয়াদে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি বলেন, জেনারেল মিনের বক্তব্যে কিছুটা আশা করা যায়। ১৯৬২ সাল থেকে দীর্ঘমেয়াদে সশস্ত্র বাহিনী মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন। সংবিধান তাদের বানানো। সেখানে তাদের সব দিক থেকে রাষ্ট্র পরিচালনার নিশ্চয়তা প্রদান করেছে।
কুতুপালং ৫ নং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মাস্টার নুরুল আলম বলেন, বিদ্যমান সংবিধানে অং সান সুচি ছিলেন সশস্ত্রবাহিনীর পুতুলের ন্যায়। কার্যত তার হাতে রাষ্ট্রীয় কোনো ক্ষমতা ছিল না। বরং সশস্ত্রবাহিনী বিগত পাঁচ বছরে সু চির মাধ্যমে তাদের অপকর্মের বৈধতা নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে, তারা কিছুটা করে দেখাবে।
রাখাইনের মংডুর একটি হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন আবদুল জব্বার। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারকে নিয়ে চীন গত ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশের সাথে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা করেছে। এর আগের সপ্তাহে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার সফর করেন। রাখাইনে চীনের কয়েক হাজার বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার শেষ গোলটি আর্মিকে দিয়ে করে জিতিয়ে নেয়ার গেম খেলছে চীন। কারণ মিয়ানমার আর্মি ও বিভিন্ন রাজ্যে যেসব সশস্ত্র বিদ্রোহী রয়েছে সবার নিয়ন্ত্রণ চীনের হাতে। এটা আন্তর্জাতিক মহলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হারানো ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।