কেমন হত যদি শনির মতো বলয় থাকত পৃথিবীর?

| সোমবার , ১২ আগস্ট, ২০২৪ at ৭:২০ পূর্বাহ্ণ

বিস্ময়কর জটিল রিং বা বলয় রয়েছে সৌরজগতের বৃহস্পতি, ইউরেনাস ও শনি গ্রহের। তবে দুঃখের বিষয়, এ তালিকায় জায়গা পায়নি আমাদের পৃথিবী। কিন্তু পৃথিবীর বলয় থাকলে কি এখানে প্রাণের সঞ্চার সম্ভব হত? পৃথিবী যখন নবীন ছিল তখন সম্ভবত এর আশপাশে পাথরের ধ্বংসাবশেষের একটি রিং ছিল। বিজ্ঞানীদের ধারণা, সাড়ে চারশ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে আঘাত হেনেছিল আরেক গ্রহ থিয়া। আর দৈত্যাকার এ গ্রহের ধাক্কায় পৃথিবীর কক্ষপথে ঢুকে পড়া পদার্থের একটি বলয় সৃষ্টি হয়। তবে, তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। এই পাথুরে ধ্বংসাবশেষ আরেকটি মহাজাগতিক বস্তু গঠন করেছিল, যাকে আমরা এখন চাঁদ বলে ডাকি। খবর বিডিনিউজের।

আকাশে কোনো বলয়ওয়ালা গ্রহ দেখা গেলে তা স্রেফ একটি ধূসর পাথরের চেয়ে বেশি দর্শনীয় দেখাতো। তবে পৃথিবীর বেলায় এমনটি ঘটলে বেশিরভাগ প্রাণ সংস্কার প্রক্রিয়া নাও টিকে থাকতে পারত। পৃথিবী চাঁদে যে মহাকর্ষীয় টান প্রয়োগ করে তা সবখানে সমান নয়। পৃথিবীর যে দিকটি চাঁদের কাছাকাছি রয়েছে, সেখানে মহাকর্ষীয় টান অনেক শক্তিশালী।

রোচে লিমিট এমন একটি দূরত্ব, যা মহাকর্ষীয় দুটি বস্তুর মধ্যকার আকার, ভর ও ঘনত্বের ওপর নির্ভর করে থাকে। যেমন সূর্য নিজের ১৩ লাখ কিলোমিটারের মধ্যে আসা যেকোনো ধূমকেতুকে চূর্ণবিচূর্ণ করে ফেলতে পারে। একইভাবে পৃথিবী প্রায় ১৮ হাজার কিলোমিটার দূর থেকে আসা মাঝারি আকারের ধূমকেতুকে ছিন্নভিন্ন করতে পারে।

চাঁদের ক্ষেত্রে, এ রোচে লিমিটের পরিমাণ সাড়ে নয় হাজার কিলোমিটার। চাঁদের আকার থেকে পৃথিবীর যেসব বলয় সৃষ্টি হতে পারে, তা সম্ভবত প্রায় পাঁচ হাজার কিলোমিটার প্রশস্ত ও প্রায় সাড়ে নয় মিটার পুরু।

শনির বরফের বলয়ের বিপরীতে, পৃথিবীর বলয়ে পাথর ছাড়া কিছুই তৈরি হবে না। পৃথিবী সূর্যের এতই কাছে যে, এর ধ্বংসাবশেষে বরফের টিকে থাকার সম্ভাবনা নেই।

আকাশের দিকে তাকালে পৃথিবী থেকে আসা এইসব বলয় সব সময় দেখতে পাওয়া যাবে। তখন বলয়ের উজ্জ্বলতার কারণে চাঁদকে আর ততটা উজ্জ্বল দেখাবে না। মানে বলয়ের পরেও যদি পৃথিবীর চাঁদ থাকত তাহলে। তবে চাঁদ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে পৃথিবীর রিং বা বলয় হিসেবে আবির্ভূত হলে সেখানে দেখার মতো আর কিছুই থাকবে না ও তা অন্য কিছুতে পরিণত হবে। তবে, হঠাৎ করে বলয় তৈরি হলে পৃথিবীর কিছু কিছু প্রাণীর নেভিগেশন সিস্টেম ব্যাহত হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাশিয়ার ১০ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে পড়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী
পরবর্তী নিবন্ধভারতে দুর্নীতি নিয়ে হিন্ডেনবার্গের নতুন রিপোর্ট, চাপে মোদী সরকার