যখন শহরে ফোটে
থোকা থোকা
কৃষ্ণচূড়া
মনে হয়
এখন আষাঢ় মাস,
বিপ্লব আসন্ন–
আমাদের অসমাপ্ত
মুক্তির বিপ্লব!
হ্যাঁ, যখন
বিজয়সরণী জুড়ে
ফুটে ওঠে লাল লাল
কৃষ্ণচূড়া
তখন আমার
কেন জানি মনে হয়
ওগুলো তো ফুল নয়
সাত কোটি মানুষের
ত্রিশ লক্ষ
শহিদ হৃদয়।
কৃষ্ণচূড়া
আসাদ মান্নান
যখন শহরে ফোটে
থোকা থোকা
কৃষ্ণচূড়া
মনে হয়
এখন আষাঢ় মাস,
বিপ্লব আসন্ন–
আমাদের অসমাপ্ত
মুক্তির বিপ্লব!
হ্যাঁ, যখন
বিজয়সরণী জুড়ে
ফুটে ওঠে লাল লাল
কৃষ্ণচূড়া
তখন আমার
কেন জানি মনে হয়
ওগুলো তো ফুল নয়
সাত কোটি মানুষের
ত্রিশ লক্ষ
শহিদ হৃদয়।
কিন্তু পথচ্যুত তারুণ্যের নৈরাজ্য যাত্রায়
‘গণতন্ত্র জিন্দাবাদ’– ধ্বনি তুলে
যখন শহরে নামে
পাকিদের প্রিয় সহচর
জানি দোস্ত্
একাত্তুরে খুনি
অশুভ প্রেতের সঙ্গী হিংস্র জানোয়ার
সহিংস্র জন্তুর চেয়ে
আরো বেশি হিংস্রতর
কেউটে সাপের চেয়ে
আরো বেশি বিষধর
স্বভূমির নাপাক বাহিনী
তখন আমার
কেন জানি হাসি পায়
হিসি পায়
চোখে ভেসে ওঠে
ঠাকুরগাঁওয়ের
আমার সতীর্থা ঐ বিধবা রাশেদার
অগ্নিদগ্ধ শিক্ষক স্বামীর
অরাজনৈতিক সহজ সরল মুখখানি—
রাশেদা এখনও কাঁদছে
রাশেদারা একা নয়
এক দুই তিন—
এরকম হাজার রাশেদা কাঁদছে
সামনে দিন
ওরা কাঁদবে
ওদের কাঁদাতে
গণতন্ত্র জিন্দাবাদ ধ্বনি দিতে দিতে
বাঙালি আত্মার ধ্বনি ‘জয়বাংলা’
খুন করতে
ওরা নাকি আসছে
ওরা আসছে!
পাক সার জমিন সাদবাদ—
জাগো বাহে কোনঠে সবাই
হুঁশিয়ার সাবধান।
২.
ও জননী জন্মভূমি!
শুধু তোর জন্য
সমূহ সন্ত্রাস আর অন্ধকার
সমূলে উৎখাত করতে
আমিও বিপ্লব চাই—
এমন বিপ্লব,
যে বিপ্লবে
শুদ্ধ হয়ে
ঘরে ফিরবে
ভালোবাসা
নূর হোসেনের গণতন্ত্র
পূর্ণিমার নিদাগ উৎসব
উত্তরের হাওয়া
দক্ষিণের জল
স্বপ্ন বুকে ঘরে ফিরবে
আমার সন্তান—
নতুন প্রজন্ম;
আর
দানবীয় খোলস পাল্টিয়ে
মানবিক আলোর পোশাকে
স্বদেশ নন্দনে
ফিরে আসবে
কতিপয়
হীনম্মন্য
বেহায়া বেকুব
হিংসা আর হিংস্রতায়
অদ্বিতীয়
ইতিহাস ভুলে যাওয়া
অকৃতজ্ঞ
আত্মনাশা
পরশ্রীকাতর
পথভ্রষ্ট
জাতিচ্যুত
অভাগা বাঙালি।
এ বিপ্লবে
ভাঙাচোরা
বাঙালি হৃদয়
জোড়া দিয়ে
গড়া হবে
রক্ত দিয়ে
তৈরি করা
দুর্দিনে মুজিব কিল্লা।