কৃষি জমির উপযোগী ধান কাটার নতুন যন্ত্র উদ্ভাবন

| সোমবার , ৩ জানুয়ারি, ২০২২ at ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ

ধান কাটার নতুন যন্ত্র তৈরি করেছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, এই যন্ত্র বা হারভেস্টারটির দাম আমদানি করা হারভেস্টারের তুলনায় অর্ধেক, কিন্তু প্রচলিত যন্ত্রের চেয়ে ধান কাটার সক্ষমতা বেশি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, এই হারভেস্টার ছোট জমির ধান কাটতে পারদর্শী। খবর বিবিসি বাংলার।
দেশে সামপ্রতিক বছরগুলোতে ধান কাটার যন্ত্র জনপ্রিয় হচ্ছে। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে দেয়া সাধারণ ছুটির সময় হাওরে ধান কাটতে শ্রমিকের সংকট দেখা দিলে এর বিক্রি ও চাহিদা বৃদ্ধি পায়। দেশে হারভেস্টার ব্যবহারের ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হচ্ছে, আইলের কারণে জমির আকার ছোট হয়। এর ফলে বাজারে প্রচলিত ধান কাটার যন্ত্র ব্যবহার করে ধান কাটা যায় না। এছাড়া আমদানি করা হারভেস্টারের দাম বেশি, যা প্রান্তিক কৃষকের নাগালের বাইরে। ব্রির বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাদের উদ্ভাবিত যন্ত্র এসব সমস্যা দূর করবে।
নতুন যন্ত্রের বৈশিষ্ট্য : গবেষণা প্রকল্পের পরিচালক একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, যন্ত্র উদ্ভাবনের সময় তারা ১৯টি বৈশিষ্ট্যের দিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করেছেন। এটি ছোট জমির ধান কাটতে বেশ কার্যকর। ঘণ্টায় মেশিনটি তিন থেকে চার বিঘা জমির ধান কাটতে পারে। জ্বালানি খরচ হয় ঘণ্টায় চার লিটার। দাম হবে ১২ থেকে ১৩ লাখ টাকা। আমদানি করা যন্ত্রের দাম ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা। হারভেস্টিং লস অর্থাৎ ধান কাটার সময় শস্য নষ্ট হওয়ার পরিমাণ শতকরা এক ভাগের কম। কাদায় চলবে। ফোর সিলিন্ডার মেশিন বলে শব্দ অনেক কম।
কখন পাওয়া যাবে : প্রকল্প পরিচালক বলেন, চুয়াডাঙার নুরনগরে পরীক্ষা করা হয়েছে হারভেস্টারটি। মাঠে পরীক্ষা করে ভালো ফল মানে এর কার্যকারিতা প্রমাণের ফল পেয়েছেন তারা। এরপর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ৩১ ডিসেম্বর। হারভেস্টারটি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন করা গেলে দেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে এটি ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। কিন্তু বাজারে এখনই পাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, আমরা গবেষণার কাজটি করেছি। এ মডেল দেশের কৃষিক্ষেত্রে সময়, খরচ এবং শ্রম বাঁচাবে, তা প্রমাণ করেছি। কিন্তু ম্যাস প্রোডাকশনের জন্য সরকার অথবা উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। কারণ এ ধরনের যন্ত্র বাণিজ্যিক উৎপাদন করতে হলে যে ওয়ার্কশপ লাগবে তা আমাদের দেশে নেই। ফলে এটি সরাসরি সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। অথবা স্থানীয় উদ্যোক্তাদের কেউ উদ্যোগী হয়ে যদি এ প্লান্ট স্থাপন করে তাহলে সেটি সম্ভব।
তবে তিনি বলেন, সরকারি পর্যায়ে ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছ। ইতোমধ্যে কয়েকটি বৈঠক তারা করেছেন। এ ধরনের একটি প্ল্যান্ট তৈরির খরচ প্রায় ১শ কোটি টাকা।
এদিকে কৃষি উদ্যোক্তা কিংবা কৃষক সমিতির মাধ্যমে হারভেস্টার কেনার ক্ষেত্রে মোট দামের অর্ধেক ভর্তুকি দেয় সরকার। হাওর এলাকায় তা ৭০ শতাংশ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিজয় মেলায় দুই স্টলের কর্মচারীদের তর্কাতর্কি থেকে মারামারি
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের শিক্ষার্থীর চিঠির জবাব দিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব